| মঙ্গলবার, ১০ জুলাই ২০১৮ | প্রিন্ট
তেজগাঁওয়ের সরকারি খাদ্যগুদামের দুরবস্থা দেখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হতবাক হয়েছেন। অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান জানিয়েছেন, গুদামটি ময়লায় পরিপূর্ণ, ভাঙাচোরা ছাদ দিয়ে পানি পড়ে।
মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি মিলনায়তনে একনেকের সভা শেষে সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান প্রতিমন্ত্রী।
সভায় ‘সারাদেশে পুরাতন খাদ্য গুদাম ও অনষঙ্গিক সুবিধাদির মেরামত এবং নতুন অবকাঠামো নির্মাণ’ প্রকল্পসহ ছয়টি প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে মোট ব্যয় হবে দুই হাজার ৯২০ কোটি ৩৯ লাখ টাকা।
অর্থ প্রতিমন্ত্রী জানান, শুধু খাদ্য গুদাম প্রকল্পে ব্যয় হবে ৩১৬ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। এর পুরোটাই সরকারি অর্থায়নে হবে।
দেশের ৬২টি জেলার ১৯৪টি উপজেলা ও সাতটি সিটি করপোরেশন প্রকল্প এলাকা। এখানে ৫৫০টি গুদাম মেরামত হবে। নতুন অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে।
এ সময় প্রতিমন্ত্রী তেজগাঁওয়ের সরকারি খাদ্যগুদাম নিয়ে বলেন, ‘তেজগাঁওয়ের সরকারি খাদ্যগুদাম দেখে প্রধানমন্ত্রী অবাক হয়েছেন, খাদ্য গুদাম ময়লা, ভাঙা, পানি পড়ে।’
অন্য প্রকল্প
যে ছয়টি প্রকল্প অনুমোদন হয়েছে তার মধ্যে আছে বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টার নির্মাণ। এতে ব্যয় হবে প্রকল্পে এক হাজার ৩০৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা।
পূর্বাচলে এই সেন্টার নির্মাণ হলে সেখানে বাণিজ্য মেলা হবে। প্রকল্পটির মেয়াদ পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে ২০১৯ সালেই চীন সরকার এটা নির্মাণ করে দিতে চেয়েছে। এর সব অবকাঠামো চীনে নির্মিত হবে। পূর্বাচলে এনে সেগুলো কেবল বসিয়ে দেয়া হবে।
নোয়াখালীর মাইজদী-রাজগঞ্জ-ছয়ানী-বসুরহাট-চন্দ্রগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের মান উন্নয়ন ও প্রশস্ততায় ব্যয় হবে ২৫২ কোটি ১৬ লাখ টাকা।
সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে (পিপিপি) খানজাহান আলী বিমানবন্দর নির্মাণ প্রকল্পে জমি অধিগ্রহণের জন্য লিংক প্রকল্পে ২১৭ কোটি ৪৯ লাখ টাকা অনুমোদন দেয়া হয়।
৩৭টি উপজেলায় সার্কিট হাউজের ঊর্ধমুখী সম্প্রসারণ প্রকল্পে ৬৫৯ কোটি ৮০ লাখ টাকা।
বাংলাদেশের প্রতিটি জেলাতে ডিসি অফিসের আওতায় ন্যূনতম একটি করে দুই থেকে তিন তলা সার্কিট হাউজ রয়েছে, যা বিভিন্ন সরকারি কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। মন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও সরকারি উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের রাষ্ট্রীয় সফরে রাত্রিযাপন ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সভা এখানে আয়োজন করা হয়ে থাকে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমান সার্কিট হাউজগুলো অনেক আগের সময়ের প্রেক্ষিতে নির্মাণ করা হয়েছিল। কিন্তু সেই সময়ের তুলনায় বর্তমানে সংসদ আসন ও সরকারি কর্মকর্তাদের সংখ্যা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। তাছাড়া দিন দিন দেশে কাজের পরিধি বেড়ে যাওয়ায় বর্তমানে বেশিরভাগ সার্কিট হাউজগুলোতেই স্থান সংকুলান হচ্ছে না।’
‘এটি বাস্তবায়িত হলে সরকারি চাকরিজীবীদের স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রার পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে সুশাসন ও দক্ষ সেবা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে খরচ ধরা হয়েছে ১৭০ কোটি ৫৬ লাখ টাকা।’
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়য়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পে ৬৫৯ কোটি ৮০ লাখ টাকা বরাদ্দও অনুমোদন করা হয় বৈঠকে।
১৯৬১ সালে ময়মনসিংহে প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ে ছয়টি অনুষদ ও ৪৩টি বিভাগ রয়েছে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেকগুল গবেষণা প্রকল্প শেষ হয়েছে। এর মাধ্যমে শস্যের উন্নত জাত, গবাদি পশু, ম্যানেজমেন্ট প্যাকেজ এবং প্রযুক্তি প্রয়োগের কলাকৌশল উদ্ভাবন করে কৃষক পর্যায়ে সম্প্রসারণ করা হয়েছে।
কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেন প্রতিমন্ত্রী। এর মধ্যেমে একাডেমিক ও গবেষণাগারের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা; একাডেমিক, প্রশাসনিক, আবাসিক এবং অন্যান্য সুবিধা সম্প্রসারণ করা হবে।
শিক্ষার মান উন্নয়ন এবং ক্রমবর্ধমান চাহিদার আলোকে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন শিক্ষা প্রদানের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তির সক্ষমতা বৃদ্ধি প্রকল্পটির মূল উদ্দেশ্য।
প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে বলেছেন সে সসব জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় নেই সেসব জেলায় পর্যায়ক্রমে বিশ্ববিদ্যালয় করা হবে।
Posted ১৫:৫২ | মঙ্গলবার, ১০ জুলাই ২০১৮
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain