বৃহস্পতিবার ২৮শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

কালের আবর্তে বিলিন সিলেটের ‘কামাল বাজার যুবফোরাম’

  |   শুক্রবার, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ | প্রিন্ট

কালের আবর্তে বিলিন সিলেটের ‘কামাল বাজার যুবফোরাম’

 

কামাল বাজার যুবফোরাম, কালের আবর্তে বিলিন এক নাম তবুও মনে পড়ে। হতাশার এক যুগ পর হলেও তার কৃর্তীকলাপ আজও ভাবায়। নব্বই দশকে যারা ঠকবগে তরুণ বা যুবক ছিলেন তাদের মনেসেই পুরোনো স্মৃতি আজও তাড়ায়। চোখ বোঝে হয়ত স্মৃতিচারণের চেষ্টা করেন কিন্তু মনে হয় কোথায় যেন গরমিল হচ্ছে। হিসাবটা একটু ওলট পালট। কতগুলো অমিমাংশিত প্রশ্নের উত্তর বার বার কুঠারঘাত করে কিন্তু কোন প্রতিশব্দ আসে না।

নব্বইয়ের দশকের সেই সুশৃঙ্খল বৃহত্তর এলাকা এবং বর্তমান সময়কার অবস্থান এক বিরাট তফাত। সেই সর্ণালী দিনগুলো কি আদৌ ফিরে আসবে? অথবাপুনরুদ্ধার করা কি যায় না? এরকম হাজার প্রশ্ন ঘোরপাক খায় এবং উত্তরণের চেষ্টা করি যদিও আমরা আশাবাদী মানুষ। আমরা এমন এক সভ্যতায় উপনিত হয়েছি যে ‘কৃতজ্ঞতাবোধ’ নামক শব্দটি ভুলেগেছি। পূর্ব পুরুষদের দোষারোপ করে লাভ নেই, এখানে আমাদের ব্যার্থতা। তারা যে কাজ শুরু করেছিলেন আমরা তা বহন করতে পারিনি।

নব্বই দশকের প্রথম দিকে সিলেট জেলার দক্ষিণ সুরমা এবং বিশ্বনাথ থানার অন্তরগত বৃহত্তর কামাল বাজার এলাকার তরুণ,যুবক এবং বিজ্ঞ মুরুব্বিয়ানদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আবির্ভাব কামাল বাজারযুবফোরাম।১৯৯২ সালের চার তরুণের অদ্ভুত আইডিয়ার পরিস্ফুটন ঘটে কামাল বাজার যুবফোরাম।তাদের একটা জেদ ধরেছিল রাগীব আলীকে সম্বর্ধনা দিতে হবে।তারই সুত্র ধরে সংগঠনটিরউত্থান।হাবীবুর রাহমান,আবুল আলম,আতিকুল ইসলাম নামর এবং আলী আহমেদ এই মানুষগুলোর প্রাথমিক উৎদোগের উপর ভিত্তি করে রাগীব আলীকে বরণ করে নেওয়ার আয়োজন করা হয়।পরবর্তীতে এটাকে আর সহজ ও বাস্তবে রুপ দিতে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যান কামাল আহমদ শিশু, গিয়াস উদ্দিন রানা, লায়েক আহমদ নোমান,এমাদাদুর রাহমান এমদাদ, হাজী শফিক মিয়া,আব্দুলবাছিত চৌধুরী এবং আর অনেকে।

আসলে আমরা এমন এক হতভাগা জাতি যে পিছনে ফিরে তাকাই না। জন ল্যাঙ্ক হন বলেছিলেন “ ভবিষ্যৎকে জানার জন্যই আমাদের অতীত জানা উচিত ”।অতীতকে পাশ কাঠিয়ে তারাই যায় যাদেরভাল অতীত নেই। যে কোন জাতির সম্মৃদ্ধ অতীত প্রেরণা যোগায় পরবর্তী জেনারেশনকে সামনে অগ্রহসর হওয়ার ক্ষেত্রে।তবে হা, পিছনে ফিরে তারাই তাকায় যাদের আছে সমৃদ্ধ অতীত। ইতিহাস তুলেধরা আমাদের দায়িত্ব বিশেষ করে আমরা যারা কাছ থেকে দেখেছি কামাল বাজার যুবফোরামকে ।

আমাদের বর্তমান প্রজন্মকে সঠিক ইতিহাস জানানো প্রয়োজন।বর্তমান এবং পরবর্তী জেনারেশনকেভাল কাজে অনুপ্রাণিত ও সু-সংঘটিত করতে হলে তাদের সামনে গৌরবময় অধ্যায় তুলে ধরতে হবে।তখন তারা নতুন অধ্যায় রচনা করতে সাহসী হবে। বর্তমান প্রজন্মকে দেখে আমার একদিকে যেমনদুংখ হয় অন্যদিকে তেমনি মায়া হয়। তারা পাচ্ছে না সঠিক দিক নির্দেশনা যার পরিপেক্ষিতে তারা আজ দিশেহারা আরেকটু যদি বলি ছন্নছাড়া। তারপরও তারা আশাবাদী কে না কেউ তাদের পথদেখাবে।

একটু যদি বর্তমান নিয়ে আলোকপাত করি তাহলে আমরা হতাশ, সামাজিক পেক্ষাপট খুবই ভয়াবহ। মানবসমাজের মধ্যে যখন মননশীল সংস্কৃতিচর্চার অভাব দেখা দেয় তখন অপরাধ প্রবণতা বেড়েযায়।খেলাধুলা, সাহিত্য চর্চা, আবৃত্তি , জ্ঞান চর্চার মতো বিষয়গুলো যখন সমাজ থেকে বিলুপ্ত হতে থাকে তখন অন্য কোনও বিনোদন বা অপরাধের দিকে মানুষ বেশি ঝুঁকে পড়ে। আর এতেই সবচেয়েবেশি ক্ষতির সম্মুখীন হয় আমাদের তরুণরা। তাদের এখন শাসন করার মত কেউ নেই। না ঘরে না বাইরে,যার ফলে সামাজিক সচেতনতা তৈরি হচ্ছে না।

এ জায়গাতেই আমি অবিভাবকদের দোষারোপকরি। আসলে আমরা মূল্যবোধকে কতটুকু জানি বা বোঝার চেষ্টা করি।ভাল মন্দ বিচার করে অর্জিত জ্ঞানই হচ্ছে মূল্যবোধ। সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে মানুষের মাঝে দেয়া হয়েছে বিবেক। যে বিবেক দিয়েমানুষ ভাল মন্দ বুঝতে পারে । ভালকে ভাল আর খারাপকে খারাপ জানা। মূল্যবোধ যখন ব্যক্তি পর্যায় অতিক্রম করে সামাজিক পর্যায়ে চলে আসে তখন তাকে বলা হয় সামাজিক মূল্যবোধ।

মানুষের বড় সম্পদ হলো মূল্যবোধ। সেই মূল্যবোধের শিক্ষা শুরু হয় পরিবার থেকে। একটি শিশুকে আচার-আচরণ শিক্ষার পাশাপাশি মূল্যবোধ শিখানো হয় নানাভাবে। সালাম দেওয়া, বিদায়ের সময়মহৎ কামনা করা, ধন্যবাদ জানানো ইত্যাদির মাধ্যমেই সেই শিশুকে মূল্যবোধের শিক্ষা দেওয়া হয়। পরিবারে যে শিক্ষা শিশু গ্রহন করতে থাকে তা পরবর্তীতে পূর্ণদমে শুরু হয় স্কুলে গিয়ে। মানবতা,মনুষ্যত্ব, মানবিকতা এসব শব্দ আমরা আজও বিশ্বাস করি, পরবর্তী প্রজন্মকে শেখাই এই শব্দগুলোর মর্ম কী।

মানুষ বরাবরই আশাবাদী প্রাণী, আশা নিয়েই আমরা প্রতিটি দিন বেঁচে থাকি। মানবজাতিরআশার অন্যতম বড় উৎস হল নতুন প্রজন্ম।তাদের যদি সুশিক্ষায় শিক্ষিত করা যায় তাহলে বেচেঁ থাকবে ইতিহাস ঐতিহ্য এবং মূল্যবোধ। যুবফোরামের ক্ষেত্রে যা লক্ষণীয়। মূল্যবোধকে ধরে রাখতে হলেসামাজিক সংগঠনের বিকল্প আর কি হতে পারে।

যুবফোরামের নাম আসলে রাগীব আলীর নাম চলে আসে। রাগীব আলী যাকে কেন্দ্র করে প্রতিষ্টিত হয়েছিল কামাল বাজার যুবফোরাম। রাগীব আলীর সার্বিক তত্তাবধায়ন ও আর্থিক সহযোগীতায়পরিচালিত হত সংগঠনটি।তার দেওয়া অনুদান গুলোকে বাস্তবে রুপ দিত সংগঠনটির সদস্যেরা।এ যেন বিরল ইতিহাস যা আজকালকের দিনে ভাবায় যায় না।বৃহত্তর এলালাকাবাসীর স্বত-স্ফুর্থ উপস্তিতীতে বিশাল আভ্যার্থনার মধ্য দিয়ে রাগীব আলীকে বরণ করেছিল কামাল বাজার বাসী। এলাকার ইতিহাসে কোনো অরাজনৈতিক ব্যাক্তিকে প্রথম স্বাগতম ছিল। যার পরিপেক্ষিতে সংগঠনটিরআত্মপ্রকাশ ঘটেছিল। শুরু থেকেই সংগঠনটি চমৎকারভাবে সবার মন জয় করেছিল।এলাকায় স্কুল-কলেজ নির্মাণ ও উন্নয়ন,জীবন যাত্রার মানের উন্নতি, রাস্তাঘাটের সংস্কার ও পাকাকরণ এবং কাল-ব্রীজ নির্মাণ সবই রাগীব আলীর অবদান।এখানে অস্বিকার করার কোনো সুঝোগ নেই।

আধুনিক কামাল বাজারের প্রথম স্বপ্ন দেখিয়েছিল কামাল বাজার যুবফোরাম।তাদের অনেক গুলো অঙ্গীকার নামা বা প্রস্তাবনার মধ্য একটি হলো বৃহত্তর কামাল বাজারকে ইউনিয়ন পরিষদে রুপান্তরযদিও বর্তমানে একটি ঝুলন্ত ইউনিয়ন হয়েছে বটে যেখানে বৃহত্তর এলাকার সবকটি গ্রাম যুক্ত হয়নি তারপরও সন্তুষ্ট কিছুটা ত পেয়েছি।যুব ফোরাম মানুষকে আশাবাদী করেছিল, সপ্ন দেখিয়েছিল তাদেরউন্নয়নমূলক কর্মকান্ডের মাধ্যমে। শুধু কি তাই এলাকাতে স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল,গ্যাস সরবরাহ, দারিদ্য দুরীকরণ, বেকার সমস্যার সমাধান এবং খেলাধুলা বিষয়ক প্রতিষ্ঠান তৈরিরপ্রস্তাবনা ছিল যুবফোরামের।

নেতৃত্ব বা লিডারশীপ কাকে বলে বিশেষ করে যখন কোনো প্রত্যান্ত এলাকাতে সামাজিক সংগঠন কিভাবে পরিচালনা করতে হয় তা  অক্ষরে অক্ষরে বুঝিয়ে দিয়েছিল কামাল বাজার যুবফোরাম।তাদেরবলিষ্ট এবং তুখোড় নেতৃত্বের উপর ভিত্তি করে প্রতিষ্টা লাভ করেছিল সংগঠনটি। এমনকি নতুন নতুন নেতৃত্ব তৈরিতে উৎসাহ যুগিয়েছে সংগঠনটি। নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টিতে তাদের অবদান অতুলনীয়। কর্মটএবং তরুণ নেতাদের পরিচিতি দিতে তারা কাজ করছে জেনারেশন টু জেনারেশন।আজকের দিনে আমরা নতুন নেতৃত্ব পাচ্ছি না কেন? কারণ একটাই সেই রকম প্লাটফর্ম নেই যেখান থেকে নতুন মুখপরিচিতি পাবে। যেমন জিনতত্ত্ববিদ এলান কিথ সর্বব্যাপী একটি সংজ্ঞা দেন তিনি বলেন,”নেতৃত্ব হল মানুষের জন্য একটি পথ খুলে দেওয়া যাতে তারা কোনও অসাধারণ ঘটনা ঘটানোর ক্ষেত্রেনিজেদের অবদান রাখতে পারে।” কিন্তু আমরা কতটুকু সেই স্পেস তৈরি করে দিচ্ছি? এখানে ব্যার্থতা কার?

কামাল বাজার যুবফোরামকে যদি একটি সংগঠন বলি ভুল হবে একটি প্রতিষ্ঠান বলা যেতে পারে। তাদের সেই গৌরবময় অতীত এখন শুধু ইতিহাস।এমন কোন সামাজিক কাজ নেই যে তাদের হাত ধরেআসেনি।খুবই সচ্ছ একটি সংগঠন ছিল।তারা এতটাই  প্রতাপ এবং প্রভাবশালী ছিল যে বৃহত্তর এলাকাতে কোন সংঘবদ্ধ অপরাধ সংঘটিত হওয়ার ঘটনা ছিল চোখে পড়ার মত।অপরাধীদের আংতকেরআরেক নাম ছিল কামাল বাজার যুবফোরাম।

তাছাড়া এই সংগঠনটির হাত ধরে যেমন অনেকে পেয়েছেন সামাজিক মর্যাদা তেমনি পেয়েছেন সামাজিক পরিচিতি।তাদের সচ্ছ নির্বাচনী প্রক্রিয়া ছিলচোখ ধাঁধাঁনো।সালটা আমার মনে নেই তবে তাদের সর্ব শেষ নির্বাচন দেখার সুভাগ্য হয়েছিল।তফসিল ঘোষণা থেকে শুরু করে নির্বাচনপূর্ব এক ধরণের উত্তেজনা বিরাজ করত যা এলাকার সাধারণমানুষদের আর আগ্রহী ও কৌতুহলী করত।পুরো একটি নির্বাচনী প্রক্রিয়া মধ্য দিয়ে সাধারণ সদস্যেদের প্রতক্ষ্য ভোটে নেতা নির্বাচীত করা হত যা এলাকার এক অনন্য ইতিহাস। আসলে বিষয়টা খুবইমজার ছিল।

বৃক্ষরোপন অভিযানের মাধ্যমে বৃহত্তর কামাল বাজার এলাকায় এক অনবদ্য নজির সৃষ্টি করে যুবফোরাম ।এলাকার অধিকাংশ রাস্তার দু-ধারে সারী বদ্ধ সবুজ প্রকৃতি যুবফোরামকে আজও মনে করিয়েদেয়।তাদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও সার্বক্ষণিক তদারকি এবং পরিচর্যার ফলে আজও দাড়িয়ে আছে বৃক্ষ যা প্রখর সৃর্যের তাপে ঘর ফেরত মানুষদের কিছুটা হলেও প্রশান্তির ছায়া দেয়।আজ কাল এরকমউৎদোগতা কি দেখা যায়? আমরা এতটাই নির্জীব যে নিজ আঙ্গিনাতে গাছ লাগাতে অনাগ্রহী। সমাজ সেবা ত দূরের কথা আজব একটা সময়।

খেলাধুলার ক্ষেত্রে কামাল বাজার যুবফোরামের সম্পৃক্ততা এখন শুধু ইতিহাস মাত্র।এলাকার তরুণদের সংগঠিত করে মাটে নিয়ে আসা তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া পাশাপশি বিভিন্ন টুনামেন্টে অংশগ্রহণকরা।আমার এখনও মনে পড়ে তখন হয়তবা বয়স আর কত হবে, বোধ হয় কিশোর বয়সে, আমরা দেখেছি আমাদের বড় ভাইদের স্বতফুর্ত অশ্রগ্রহণ সেই পড়ন্ত বিকালে কামাল বাজাররে ফুটবলেরমাটে।যা আজ কালকের দিনে খুবই বিরল।ফুটবলের নাম আসলে রাগীব আলী গোল্ডকাপের নাম চলে আসে।

আর রাগীব আলী গোল্ডকাপের নামের সাথে আবুল আলম নামটা নিতে হয়।খেলাধুলাউন্নয়ন এবং তরুণদের মাটমোখি করতে আবুল আলমের প্রচেষ্টা ছিল চোখে পড়ার মত।এলাকার ইতিহাসের সবচেয়ে সফল ফুটবলের আয়োজক ছিল কামাল বাজার যুবফোরাম। বর্তমান সময়েরকয়জন বা জানে সেই অতীত? অথবা কয়জনের বা মনে আছে? আর তাদের কি এবং কেন বা জানানো উচিত যেখানে ইতিহাসকে আমরা অন্ধকার পৃষ্টে নিক্ষেপ করেছি।

যাইহোক, যদিত্ত এই অন্ধকারেকিছুটা হলেও আশার আলো ফুটিয়েছে গ্রেটার কামাল বাজার স্পোর্টস ডেভেলপমেন্ট ট্রাস্ট। এমদাদুর রাহমান,বখতিয়ার খাঁন এবং তাদের গ্রেটার কামাল বাজার ট্রাষ্ট ইউকে কম হলেও ক্ষতি পোষণেরচেষ্টা করছেন।

এক এবং একতা কি তা আমি দেখেছি এই সংগঠনের কার্যক্রমে।তাদের সাংগঠানিক ভিত্তি এতই শক্তিশালী ছিল যে, যে কোন ধরণে দুর্যোগে অথবা এলাকার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তাদের একাত্মতাআজওখুঁজি ক্ষণে ক্ষণে।

 

সবচেয়ে মজার এবং আশ্বর্যের ব্যাপার হচ্ছে বৃহত্তর এলাকাবাসীর একনিষ্ঠ সমর্থন সহযোগিতা সহমর্মিতা এবং অনুগ্রহতা ছিল তাদের প্রতি। তরুণ থেকে মুরুব্বি সবার আস্তার স্হানছিল সংগঠনটি।বিচারকার্যে যেখানে প্রশাসন ব্যার্থ সেখানে যুবফোরামের উপস্তিতি করেছে আর সহজ।কার না অজানা। নিংস্বার্থতার এক আদর্শিক প্রতিক বলা যেতে পারে।যেখানে বর্তমান সময়েমানুষজন ব্যাস্ত নিজ নিজ স্বার্থ নিয়ে।আমি বিশ্বাস করি, নব্বই দশকে যারা তরুণ বা যুবক ছিলেন তাদের কাছে সংগঠনটির পদ পদবী বা সদস্যে হওয়া একটা সম্মাননার ব্যাপার ছিল। যা আজকের দিনেশুধু দুর্নীতি মাত্র।

অবাক হই এত প্রভাবশালী একটি সামাজিক সংগঠন আকাশচুম্বি জনপ্রিয়তা থাকা সত্বেও কিভাবে বিলুপ্তের পথে।রাগীব আলীর হাতে গড়া একটি সংগঠন অদৃশ্যমান হয়ে যাবে ভাবা যায় না।কোথায় ভুলহচ্ছে,হা, নিশ্চয় কোন ভুল ছিল। সেই ভুলের মাশুল তিনি(মি.আলী) আজও দিচ্ছেন।সত্যি বলতে ভুলে ভরা ছিল রাগীব আলীর চারপাশটা। তা না হলে যুবফোরাম ব্যাপক আকারে জনপ্রিয়তা পেল প্রভাববিস্তার করতে থাকল তারপরও কেন ফ্রিজ হয়ে গেল আমার বোধগম্য নয়।যুবফোরামের সাথে বৃহত্তর এলাকার ভালবাসার সম্পর্ক ছিল।

 

যে দিন থেকে যুবফোরামের কার্যক্রম সম্ভির হয়েছে সে দিন থেকেএলাকার মানুষের সাথে রাগীব আলীর দুরুত্ব সৃষ্টি হয়েছে।এসব ভাবতে হবে। দায় এড়াতে পারেন না। ইতিহাস লেখনের সম্ভবনা এখনও রয়েছে একটু চিন্তা করবেন।এক বার হলেও ভাবা উচিত প্রায় তিনদশক পৃর্বে যুবফোরামের নেওয়া আইডিয়াগুলোকে এখন বিভিন্ন ভাবে হলেও বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এখান থেকেই সহজে অনুধাবন করা যায় যুবফোরাম এবং তার নেতারা কত সুদুর প্রসারী ছিলেন।

কামাল বাজার যুবফোরাম প্রতিষ্ঠার এবং এগিয়ে নেওয়ার পিছনে সেই কৃর্তিমান মানুষগুলোর নাম না নিলে একেবারে অকৃতজ্ঞ হয়ে যাব, যাদের অবদান সোনালী অক্ষরে রচিত হবে কোন এক পৃষ্টায়।

 

যেমন , কামাল আহমেদ শিশু ,গিয়াস উদ্দিন রানা,মরহুম আরশ আলী,আব্দুর রব,হাজী শফিক মিয়া,লায়েক আহমেদ নোমান,এমদাদুর রাহমান, অব্দুল কাইয়ুম মুকুল,হাবিবুর রাহমান ,আব্দুল বাছিতচৌধুরী,ওয়েছ মিয়া,মরহুম বাহার উদ্দিন,আবুল আলম,নজরুল ইসলাম,আব্দুল আহাদ,আব্দুল মনাফ,মন্জু মিয়া,আলী আহমেদ ,আলতাফ হোসেন,আব্দুস শহিদ,শামছুল ইসলাম,বুরহান উদ্দিন,মরহুমআব্দুস কুদ্দুস,মরহুম রফিকুর রাহমান ছোয়াব মিয়া, মরহুম আজিজুর রাহমান পাখি মিয়া,মনোহর আলী,মরহুম ফয়েজ আলী মেম্বার,হাজী সমছু মিয়া,সোলেমান খাঁন,আব্দুস সালাম,রমজানআলী,আব্দুল খালেক চেরাগ,মরহুম আফতাব মিয়া, আব্দুল মালেক বীরবিক্রম,মরহুম পংকি মিয়া,মরহুম আবুল মালেক ময়ুর,এনামুল হক মাক্কু,কুব্বার মিয়া,আব্দুল হান্নান, শওকত আলী,মুহিবুররাহমান এবং আর অনেকে যাদের নাম এই মুহূর্তে স্বরণে নেই ।

 

স্মৃতির পাতায় আপনাদের অনুপস্থিতি অনুভব করবে কোন এক প্রজন্ম তখন হয়তবা আপনারা লোকচক্ষুর আড়ালে চলে গেছেন।বেলা যেকখন গড়িয়ে সন্ধ্যা নেমে এসেছে কেউ টের পায়নি।অনেক দেরি হয়ে গেছে। তারপরও আশাবাদী মানুষগুলো খুঁজবে আলোর সন্ধান। মেঘে ঘেরা আকাশে সূর্যের উকিঁ এখনও আশা জাগায়।উল্লেখিত এইমানুষগুলোর প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর একমাত্র উপায় ঘুমন্ত ফোরামকে জাগ্রত করা।

লেখক : মোঃ হাফিজুর রাহমান, অনলাইন এক্টিভিষ্ট

 

 

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ২৩:৩৮ | শুক্রবার, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

অবাধ্য ভাবনা
(495 বার পঠিত)
advertisement
advertisement
advertisement
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com