| বুধবার, ০৮ আগস্ট ২০১৮ | প্রিন্ট
ওনারা যে মাঝে মাঝে নালিশ দেন ওটা কিসের নালিশ দেন? আগেও তো দিয়েছেন যখন বিরোধী দলে ছিলেন শহীদ মিনার থেকে কি করে মিছিল নিয়ে কূটনৈতিক পাড়ায় গেছেন তা তো আমরা ভুলে যাইনি। মানুষ যখন দল বিছিন্ন হয়ে যায়, পায়ের তলায় মাটি সরে যায় তখন প্রলাপ বকতে শুরু করে। ওবায়দুল কাদের সাহেবরা প্রলাপ বকছে।’ বিএনপি বিদেশীদের কাছে নালিশ করছে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রহুল কবির রিজভী এ মন্তব্য করেন।
বুধবার রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের কাছে এ প্রতিক্রিয়া দেন। তিনি বলেন, তারা ইলিয়াস আলীকে গুম করেছে, বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের হত্যা-গুম করেছে। অসংখ্য ছাত্রদের ক্রসফায়ারে হত্যা করেছে।
রিজভী বলেন, এই নির্বিচারে হত্যার মধ্য দিয়ে এখন তারা রক্তপাত শুরু করেছেন মাসুম বাচ্চাদের ওপর। ঝিগাতলা, সাইন্সল্যাব ধানমন্ডিতে রক্তের স্রোত দেখতে পাবেন। এই রক্তপাত করেছে আওয়ামী লীগ নেতারা ও এই সরকার। পরবর্তীতে ছাত্রলীগ, যুবলীগ এবং আইন শৃঙ্খলাবাহিনীকে লেলিয়ে দিয়ে এই রক্তপাত করে এখন পাগলের প্রলাপ বকছে। কারণ যারা মানুষ মারে তাদের মধ্যে মানবিকতা, মনুষ্যত্ব থাকে না তখন তারা প্রলাপ বকে। এখন আমরা আওয়ামী লীগ নেতাদের কাছ থেকে প্রলাপ শুনছি। সুতরাং এসব কথা বলে লাভ হবে না। কারণ তাদের পায়ের তলার মাটি ভূমিকম্পের মতো সরে গেছে। যেকোনো সময়ে এই সরকারের পতন হবে। এবং মানুষ সেটাই কামনা করছে তার নিরাপত্তার জন্য, সন্তানদের নিরাপত্তার জন্য। ভোট ও নির্বাচন ও রাষ্ট্রে নিরাপত্তার জন্য এই সরকারের বিদায় ঘণ্টা শোনার জন্য অপেক্ষা করছে।
তিনি বলেন, গতকাল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাহেব বলেছেন, “কোথায় কি হচ্ছে আমরা জানি। দেশে যখন শান্তিময় অবস্থা বিরাজ করছে ঠিক সে সময়ে ১/১১ এর কুশীলবরা আবার রাজনৈতিক অঙ্গনে নেমে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের অশুভ খেলায় মেতে উঠেছে। এছাড়াও আরও নানা কথা বলেছেন তিনি।” আমার প্রশ্ন ১/১১’র কুশিলব কারা? তাহলে আপনারা কে? আপনাদের আন্দোলনের ফসলইতো ১/১১। আপনিইতো ১/১১’র প্রক্রিয়াকে মহিমান্বিত করে তা ‘পাঠশালা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছিলেন। আপনাদের আন্দোলনের ফসলের বিরুদ্ধে এখন বিরুপ মন্তব্য করছেন কেন? তারা আপনাদের এতো প্রিয় ছিল যে, তাদের সব অপরাধ ও বেআইনি কাজ বৈধ করে দেবেন বলেছিলেন এবং ক্ষমতায় এসে তা করেছেন। তাদের পৃষ্ঠপোষকতায় ১০ বছর আপনারা ক্ষমতায়। জনগণের ইচ্ছাকে হানাদার বাহিনীর মতো পদদলিত করে র্যাব-পুলিশকে নিজেদের মতো সাজিয়ে ছাত্রলীগ-যুবলীগ-শ্রমিকলীগকে বেআইন অস্ত্রে সজ্জিত করে গণতন্ত্রকে নিশ্চিহ্ন করার পরও ১/১১’র কুশীলব নিয়ে কথা বললে মানুষ মুখ টিপে হাসে। কারণ জোরে হাসলে গুম হওয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে।
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ওবায়দুল কাদের সাহেবরা শাক দিয়ে মাছ ঢাকতে পারছেন না বলেই এখন প্রলাপ বকতে শুরু করেছেন, গুজবের আশ্রয় নিয়েছেন। ক্ষমতাসীন নেতারা তাদের নিজস্ব মিডিয়া দিয়ে বিএনপির বিরুদ্ধে নোংরা অপপ্রচারে মেতে উঠেছেন। ছাত্র আন্দোলনের সহিংসতায় বিএনপিকে জড়াতে তারা কুৎসিত অপকৌশলের আশ্রয় নিয়েছে। ৬ আগষ্ট দৈনিক জনকণ্ঠে একটি ছবি ছাপা হয়েছে, যে ছবিটি ৬ বছরের পুরোনো ২০১২ সালের ২৫ জানুয়ারী দৈনিক ভোরের কাগজে প্রকাশিত একটি ছবি। ছবিতে দেখানো হয়েছে ছাত্রদলের এক নেতার নাম, আসলে সে ছাত্রদলের নেতা নন এটা ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষের ছবি। ছবিতে যারা ছিল তারা সবাই ছাত্রলীগ। জনমনকে বিভ্রান্ত করতে বিএনপি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে কুৎসা রটনার জন্য সরকারি প্রোপাগান্ডা মেশিন দিনরাত কাজ করছে। যেটার নজির গত ৬ আগষ্ট জনকণ্ঠে দেখানো হলো। সরকারের প্ররোচনায় পত্রিকাটি গুজব রটিয়ে চলছে। আমারা এর নিন্দা জানাচ্ছি।
তিনি আরো বলেন, দেশে শান্তিময় অবস্থার কথা ওবায়দুল কাদের সাহেব বলেছেন, কিন্তু বলেননি কি ধরণের শান্তি। হত্যা, গুপ্ত হত্যা, ক্রসফায়ার, গুম আর অদৃশ্য হয়ে যাওয়ার ভয়ে আতঙ্কিত মানুষকে দেখে তিনি শান্তিময় বলতেই পারেন। কিন্তু সেটা যে কবরের শান্তি, গোরস্থানের নীরবতা, তা তিনি টের পান না ক্ষমতার উষ্ণতায়। কিন্তু নীরব মানুষের ক্ষোভ যে ছাই চাপা আগুনের মতো ধিকি ধিকি জ্বলছে এবং সেটা যে কোন সময় কুন্ডলী পাকিয়ে বিরাট আকার ধারণ করতে পারে সেটির আঁচ পেরেই বেসামাল কথা বলছেন।
Posted ১৪:২৪ | বুধবার, ০৮ আগস্ট ২০১৮
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain