বৃহস্পতিবার ১৮ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম >>
শিরোনাম >>

ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থান দিবস

  |   শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারি ২০১৪ | প্রিন্ট

child-gonoobbottan

২৪ জানুয়ারী :  ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থান দিবস। যা শহীদ আসাদ দিবস নামেও পরিচিত। ১৯৬৯ সালের এ দিনে তৎকালীন পূর্বপাকিস্তানের আইয়ুব সরকার তথা পাকিস্তানি আমলা-সামরিক শাসকদের বিরুদ্ধে গণবিস্ফোরণ ঘটেছিল। ষাটের দশক জুড়ে আইয়ুব সরকারের বিরুদ্ধে এবং বাঙালির স্বাধিকার আদায়ের লক্ষ্যে যে বেগবান আন্দোলন গড়ে উঠেছিল, তারই প্রবল বিস্ফোরণ ঘটেছিল ১৯৬৯ সালের ২৪ জানুয়ারি। মূলত ২০ জানুয়ারিই গণঅভ্যুত্থান ঘটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আসাদুজ্জামানের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে।

পাকিস্তানী স্বৈর শাসক আইয়ুব খানকে উৎখাতের লক্ষ্যে ১৯৬৮ সালের ডিসেম্বর মাসে আইয়ুব বিরোধী আন্দোলনের শুরু হয়। দেশব্যাপী আন্দোলনের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ার প্রেক্ষিতে ১৯৬৯ সালের ২০ জানুয়ারী ঢাকার রাজপথে গুলিতে শহীদ হন আসাদ। এতে করে আন্দোলনের তীব্রতা আরও বৃদ্ধি পায়। ১৯৬৯ সালের ২৪ জানুয়ারী ঢাকায় সংগ্রামী ছাত্র-জনতা শাসকগোষ্ঠীর দমন-পীড়ন ও কারফিউ ভঙ্গ করে মিছিল বের করে। মিছিলে পুলিশের গুলি বর্ষণে নিহত হন নবকুমার ইনষ্টিটিউটের নবম শ্রেণির ছাত্র মতিউর রহমান। জনতা রুদ্ররোষে ফেটে পড়ে। গণঅভ্যুত্থানের জোয়ারে স্বৈরাচারী আইয়ুব সরকার তথাকথিত আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার প্রধান অভিযুক্ত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবসহ সকল রাজবন্দীকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। পতন ঘটে আইয়ুব খানের স্বৈরতন্ত্রের।

৪ জানুয়ারি, ১৯৬৯ইং তারিখে ছাত্রদের ১১ দফা এবং বঙ্গবন্ধুর ৬ দফা দাবির সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, যাতে প্রধান ভূমিকা রাখেন আসাদ। ১৭ জানুয়ারি, ১৯৬৯ইং সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ছাত্ররা দেশব্যাপি সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের ডাক দেয়। ফলে সরকার ১৪৪ জারি করেন যাতে করে চার জনের বেশি লোক একত্রিত হতে না পারে।

পূর্ব পরিকল্পনা অনুসারে ২০ জানুয়ারি, ১৯৬৯ এর দুপুরে ছাত্রদের নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজের পাশে চাঁন খাঁরপুল এলাকায় মিছিল নিয়ে অগ্রসর হচ্ছিলেন আসাদুজ্জামান। পুলিশ এ সময় তাদের বাধা দেয় ও চলে যেতে বলে। কিন্তু বিক্ষোভকারী ছাত্ররা সেখানে প্রায় এক ঘণ্টা অবস্থান নেয় এবং আসাদ ও তার সহযোগিরা স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকে। ওই অবস্থায় খুব কাছ থেকে আসাদকে লক্ষ্য করে এক পুলিশ অফিসার গুলি করে। তৎক্ষণাৎ গুরুতর আহত অবস্থায় আসাদকে হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

১৯৪২ সালের শহীদ আসাদ ১০ই জুন নরসিংদী জেলার শিবপুর থানার ধানুয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। শিবপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৬০ সালে মাধ্যমিক শিক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে জগন্নাথ কলেজ (বর্তমান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়) ও মুরারী চাঁদ মহাবিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। ১৯৬৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন তিনি।

আটষট্টি-ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে এক তাৎপর্যপূর্ণ মাইলফলক। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলণের মাধ্যমে প্রতিফলিত হয়েছিল বাঙ্গালীর জাতীয় সম্মান এবং স্বতন্ত্র জাতীয়তাবোধের। আটষট্টি-ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে যা আরও পূর্ণতা পায় এবং ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধকে অনিবার্য করে তোলে।

শহীদ আসাদ, মতিউরসহ আটষট্টি-ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের এবং মুক্তিযুদ্ধের সকল শহীদের অসামান্য অবদানের কথা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছে দেশের বিভিন্ন সংগঠন।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ০৯:৫৯ | শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারি ২০১৪

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর

Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com