| মঙ্গলবার, ০৭ জানুয়ারি ২০২০ | প্রিন্ট
ভারতের রাজধানী দিল্লিতে ভোট ৮ ফেব্রুয়ারি। সমীক্ষা বলছে ১১ তারিখ ফল বেরোলে, হাসি ফুটবে সম্ভবত বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের মুখেই। সমীক্ষা সব সময় মেলে না, কিন্তু রাজনীতির লোকজন ও দিল্লিবাসীও খুব একটা অবিশ্বাস করছেন না সমীক্ষার এই ফল।
কেজরিওয়াল ভোটের দিন ঘোষণার পরই স্পষ্ট করে বলেছেন, ‘পাঁচ বছর কাজ করে থাকলে ভোট দিন আমাদের। আর কাজ না-করে থাকলে ভোট দেবেন না। দেশের আর কোনো মুখ্যমন্ত্রী সম্ভবত এমন কথা বলেননি।’
দিল্লিতে লোকসভা আসন ৭টি। বিধানসভায় ৭০টি। ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে বিজেপি দিল্লির সব ক’টি আসনে জিতলেও বিধানসভায় জুটেছিল মাত্র ৩টি আসন। বাকি ৬৭টিতেই জেতে কেজরিওয়ালের আম আদমী পার্টি (আপ)। ২০১৯ সালেও লোকসভা ভোটেও দিল্লির সব ক’টি আসনে জিতেছে বিজেপি। কেন্দ্রে ক্ষমতায় ফিরেছেন নরেন্দ্র মোদি। প্রশ্ন উঠেছে, এবার বিধানভা ভোটেও কি ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হতে চলেছে!
কেন্দ্রে ক্ষমতায় থাকলেও নাকের ডগায় কেজরীর শাসন বিজেপির কাছে বরাবরই প্রবল অস্বস্তির। তার উপরে গত এক বছরে ঝাড়খণ্ডসহ পাঁচ রাজ্যে সরকার খুইয়েছে বিজেপি। এনআরসি এবং সিএএ নিয়ে বিতর্কের মধ্যেই বছরের শুরুতেই দিল্লি দখল করে দেশব্যাপী সমর্থকদের চাঙ্গা করতে মরিয়া নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহেরা। ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ে এবারও বেশ কিছুটা পিছন থেকে শুরু করছে কংগ্রেস। এই ভোট তাদের কাছে কার্যত রাজধানীতে নতুন করে প্রাসঙ্গিকতা ফিরে পাওয়ার লড়াই।
আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি শেষ হচ্ছে দিল্লি বিধানসভার মেয়াদ। ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে সিবিএসই এর দশম শ্রেণির পরীক্ষা। তার আগে ভোট পর্ব মিটিয়ে ফেলতে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুনীল আরোরা সোমবার জানান, ৭০ আসনে ভোট হবে এক দিনে। ৮ ফেব্রুয়ারি। গণনা ১১ ফেব্রুয়ারি।
এর পরপরই এবিপি নিউজ এবং সি ভোটারের জনমত সমীক্ষা সম্প্রচার করা হয়। জানানো হয়, আসন কমবে আপের। তবে ৫৯টি আসনে জিতে কেজরীই ফিরতে চলেছেন। বিজেপি ও কংগ্রেস পেতে পারে যথাক্রমে ৮টি ও ৩টি আসন।
ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণার পরে সমীক্ষার ফল জানিয়ে চ্যানেলটি নির্বাচনী বিধি ভেঙেছে বলে কমিশনের কাছে অভিযোগ করেছেন নয়াদিল্লি কেন্দ্রের বিজেপি সাংসদ মীনাক্ষী লেখি।
শাহরা মুখে মোদির ভরসায় দিল্লি দখলের কথা বললেও এ নিয়ে প্রবল সংশয় রয়েছে। ঝাড়খণ্ডে জয় নিশ্চিত ধরে নিয়েও ধাক্কা খেতে হয়েছে। এবার তো প্রতিপক্ষ কেজরিওয়াল। তার সমান মাপের কোনো নেতা পাচ্ছে না বিজেপি। বিজেপি নেতারাই মানছেন ধারে-ভারে অনেকটাই পিছিয়ে দলের দিল্লি সভাপতি মনোজ তিওয়ারি।
কেজরী এদিন দাবি করেছেন, কে কোন দলের সে কথা না ভেবে নিরন্তর কাজ করেছে তার সরকার। এবার তারা ঘরে ঘরে যাবেন। সন্দেহ নেই তাদের প্রচারের মুল অস্ত্র হবে শিক্ষা-স্বাস্থ্যে আমূল সংস্কার। সরকারি স্কুলের মানোন্নয়ন, মহল্লা ক্লিনিক চালু করা, বিদ্যুতের বিলে ২০০ ইউনিট পর্যন্ত ছাড়, বাসে মহিলাদের বিনা ভাড়ায় যাতায়াতের বন্দোবস্তের মতো প্রসঙ্গ।
উল্টো দিকে মোদি সরকার দিল্লির কলোনিগুলিকে বৈধতা দেওয়ার ঘোষণা করলেও কাজ এগোয়নি। এনআরসি, সিএএ আর জাতীয় জনসংখ্যা পঞ্জি (এনপিআর) প্রশ্নে মেরুকরণই মূল ভরসা বিজেপি। তাতেই অন্তত ৩০টি আসন আশা করছে তারা। হিন্দু ভোট না-হারাতে নাগরিকত্ব প্রশ্নে নীরব থাকারই কৌশল নিয়েছেন কেজরিওয়াল। সূত্র: আনন্দবাজার
Posted ১৩:৪১ | মঙ্গলবার, ০৭ জানুয়ারি ২০২০
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain