| মঙ্গলবার, ১৩ নভেম্বর ২০১৮ | প্রিন্ট
নিজস্ব প্রতিনিধি, লন্ডন : বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল যুুক্তরাজ্য শাখার আয়োজনে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে । যুক্তরাজ্য বিএনপি‘র সভাপতি আলহাজ্ব আব্দুল মালিকের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারী কয়সর এম আহমেদের পরিচালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপি‘র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ।
জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমানে বক্তব্য সারসংক্ষেপ:
• আজকে নির্বাচন নামক যে আন্দোলন শুরু হয়েছে সেই আন্দোলনের নেতা কর্মী শুধু আমার দলের নেতা কর্মীরাই নয়, এই আন্দোলনের নেতা কর্মী হলেন দেশের ১০ কোটি ভোটাররা। আর যেই আন্দোলনের নেতা কর্মীর সংখ্যা ১০ কোটি সেই আন্দোলন কখনোই ব্যর্থ হতে পারে না ।
• ১০ কোটি ভোটারের আন্দোলনে হেরে যাবার ভয়ে অবৈধ সরকার আন্দোলনকে বন্ধ করতে ইভিএমের মাধ্যমে ভোট গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যেখানে আমেরিকা, লন্ডন, এমনকি পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতেও এই ইভিএম ব্যবহার করা হয়না । সেসকল দেশের আদালত থেকে এই ইভিএম মেশিন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কারন তারা দেখেছে ইভিএমের মাধ্যমে কিভাবে ভোট চুরি করা হয়, আর এই অবৈধ সরকারের ইতিহাস হল ভোট চুরি, নতুন করে ভোট ডাকাতি শুরু করতে চাচ্ছে ।
• ইভিএমকে চালু করতে তারা দেশপ্রেমী সেনাবাহিনীকে জনগনের মুখোমুখি করতে চাচ্ছে । একজন সেনা প্রধানের সন্তান হিসেবে দেশপ্রেমী সেনাবাহিনীর কাছে আমার অনুরোধ থাকবে জনগনের চুরি করা ৪০০০ কোটি টাকা দিয়ে কেনা এই ইভিএম পদ্ধতিতে জনগনের ভোট ডাকাতির যে প্ল্যান ও কর্মসূচী অবৈধ সরকার করতে চাচ্ছে সেই প্ল্যান ও কর্মসূচীতে আপনারা নিজেদেরকে জড়াবেন না। আপনারা জানেন জনগন কি চায়, আপনারা সেভাবেই কাজ করবেন এটাই আপনাদের কাছে আমার আহবান ।
• ব্যাংক ডাকাত ও ভোট ডাকাতের সরকার এই সরকার, বিশ্বে আন্তর্জাতিক ভাবে স্বৈরাচার খ্যাত এই অবৈধ সরকার এই নতুন আন্দোলনের ভয়ে প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মকর্তাদের বলে বেড়াচ্ছে গত ১০বছরে তাদের আমলে যারা প্রশাসন সহ অন্যান্য সরকারী চাকুরিতে নিয়োগ পেয়েছেন বিএনপি ক্ষমতায় এলে তাঁদেরকে চাকুরিচ্যুত করা হবে। আমি আমার দলের পক্ষ থেকে দায়িত্ব নিয়ে বলতে চাই, আপনারা এই ভয় পাবেন না, বিএনপি ক্ষমতায় এলে পুলিশ বাহিনী হোক আর প্রশাসন বা সিভিল বাহিনীর হোক অন্যায়ভাবে কারো চাকুরি যাবে না । আপনাদের কোন ভয় নেই, কারন আমরা বুঝি ও জানি এই অবৈধ সরকারের বিভিন্ন অবৈধ এমপি অবৈধ মন্ত্রী বিভিন্ন সময় আপনাদেরকে বাধ্য করেছে বিভিন্ন অন্যায় কাজ করতে।আপনারা জনগনের সাথে প্রতিনিয়ত উঠাবসা করেন, আপনারা এই দেশের নাগরিক তাই আপনারাও জানেন জনগন কি চায়, সে মোতাবেক আপনারা কাজ করুন । আপনাদের প্রতি আমার অনুরোধ থাকবে জনগন আপনাদেরকে যে পবিত্র দায়িত্ব দিয়েছে আপনারা আপনাদের সেই পবিত্র দায়িত্ব পালন করুন ।
• আজকে নির্বাচন নামক যে আন্দোলন শুরু হয়েছে এটা কিন্তু কোন সাধারন নির্বাচন নয়, এটা জনগনের গণতন্ত্র রক্ষার নির্বাচন, এটা স্বাধীনতা রক্ষার নির্বাচন, এটা বাক- স্বাধীনতা রক্ষার নির্বাচন, এটা বাংলাদেশের মিডিয়াকে ডিজিটাল আইন থেকে মুক্ত করার নির্বাচন। এটা সেই নির্বাচন যে নির্বাচন ফেলানির হত্যাকাণ্ডের জবাব দিবে, এটি সেই নির্বাচন যে নির্বাচন সাগর রুনির হত্যাকাণ্ডের জবাব দেবে। এটি সেই নির্বাচন যে নির্বাচন শেখ হাসিনার দায়িত্বে অবহেলার কারনে আমার দেশপ্রেমী যে ৫৭ জন সেনাবাহিনীর অফিসার নিহত হয়েছে সেই হত্যাকাণ্ডের জবাব দিবে। এটি সেই নির্বাচন, গত ১০ বছরে জনগনের যে লক্ষ কোটি টাকা পাচার করা হয়েছে সে পাচার রোধের নির্বাচন। এটি সেই নির্বাচন যে নির্বাচন নকল ও প্রশ্ন ফাঁস থেকে রক্ষা করে সুন্দর শিক্ষা ব্যবস্থার নির্বাচন ।
এটি ইলিয়াস আলী সহ আমাদের হাজার হাজার গুম খুন হওয়া নেতা কর্মীদের হত্যার জবাবের নির্বাচন । এটি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা রক্ষার নির্বাচন । এটি সেই নির্বাচন, গত ১০ বছরে যে সকল গুণী ব্যাক্তি বর্গের মান সন্মান নষ্ট করেছে সেই সন্মান রক্ষার নির্বাচন । এটি কোটা আন্দোলনের দাবীতে রাজপথে নামা হাজারো শিক্ষার্থীর উপর এই ব্যাংক ডাকাত সরকার যে নির্যাতন করেছে সেই নির্যাতনের জবাবের নির্বাচন। এটি নিরাপদ সড়ক চাই এর দাবীতে রাজপথে আমার ছোট কোমলমতি ভাই বোনদের উপর যে অত্যাচার করেছে এই অবৈধ সরকার সেই অত্যাচারের জবাব দেবার নির্বাচন ।
• প্রিয় দেশবাসী, এই নির্বাচন শুধু নির্বাচনই নয়। এটি আরও একটি মুক্তিযুদ্ধ। ১৯৭১ সালে আমাদের পূর্ব পুরুষরা মুক্তিযুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করে গিয়েছেন কিন্তু এই দেশের বিরুদ্ধে সময়ে অসময়ে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র চলেছে এবং বর্তমানেও চলছে। আর এই নির্বাচন সেসকল ষড়যন্ত্রের জবাব দেবে । এই নির্বাচন নতুন প্রজন্মের জন্য যারা নিরাপদ সড়ক তৈরি করতে চেয়েছিল তাদের জন্য নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ার আন্দোলন । নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ার মুক্তিযুদ্ধ ।
• আর এই নির্বাচন নামক মুক্তিযুদ্ধে ১০ কোটি মুক্তিযোদ্ধার অস্ত্র কোন বন্দুক বা গোলা বারুদ হবেনা, এই ১০ কোটি মুক্তিযোদ্ধার অস্ত্র হবে তাদের ব্যালট পেপার ।
• টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া পর্যন্ত আমার যত নেতা কর্মী আছেন তাঁদেরকে আমি একটা দায়িত্ব দিতে চাই – আপনারা এই মুক্তিযুদ্ধে ১০ কোটি মুক্তিযোদ্ধাকে ভোট কেন্দ্রে নিরাপদে নিয়ে যাবেন ।
• তরুন প্রজন্মের যারা নিরাপদ সড়কের দাবী করেছিলে তোমাদের কাছে আমার দাবী তোমরা নিরাপদ সড়কের পাশাপাশি নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ে দাও।আজ সারা বাংলাদেশ তোমাদের কাছে সাহায্য চায়। যদি তোমরা এই দায়িত্ব তুলে নিতে পার তবে তোমরা নিরাপদ সড়ক নয় গড়তে পারবে একটি নিরাপদ বাংলাদেশ ।
যদি তুমি ভয় পাও তবে তুমি শেষ, যদি তুমি রুখে দাঁড়াও তবে তুমিই বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ জিন্দাবাদ ।
Posted ২০:৩৭ | মঙ্গলবার, ১৩ নভেম্বর ২০১৮
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | admin