| বুধবার, ১৮ জুলাই ২০১৮ | প্রিন্ট
সারাদেশে চলমান মাদকবিরোধী অভিযানে গত প্রায় দুই মাসে র্যাব-পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহতের সংখ্যা ২০০ ছাড়িয়েছে। অথচ কক্সবাজার-৪ (উখিয়া-টেকনাফ) আসনের বিতর্কিত সরকারদলীয় সংসদ সদস্য ইয়াবা সম্রাট আবদুর রহমান বদি এখনও ধরা-ছোঁয়ার বাইরে।
বদির বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও পার পেয়ে যাচ্ছেন তিনি। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে কেউ আইনের উর্ধে নয়। অথচ সারাদেশে মাদকবিরোধী অভিযানে প্রতিদিন নিহতের সংখ্যা বাড়লেও বদির বিরুদ্ধে এখনও কোন ব্যবস্থা নেয়নি সরকার।
মাদকবিরোধী অভিযানের আগে পাঁচটি রাষ্ট্রীয় সংস্থার সমন্বয়ে মাদক ব্যবসায়ী ও পৃষ্ঠপোষকদের একটি তালিকা তৈরি করে সরকার। সেই তালিকায় মাদকের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে আছে বদির নাম। এছাড়া মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের তালিকায় এক নম্বরে আছে বদির নাম। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের করা টেকনাফের শীর্ষ মানব পাচারকারীর তালিকাতেও তাঁর নাম ছিল। দেশে মাদক ইয়াবার গডফাদার ও ব্যবসায়ীর তালিকায় টানা ১০ বছর ধরে ছিল বদির নাম। কিন্তু গত মার্চ মাসে একটি সংস্থার তালিকা থেকে সেই নাম বাদ দেওয়া হয়। তবে সেই তালিকায় বদির পাঁচ ভাই, এক ফুপাতো ভাই, দুই বেয়াই ও এক ভাগ্নের নাম আছে।
এদিকে কেন্দ্রীয়ভাবে সরকারি কোনো হিসাব না পাওয়া গেলেও মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের হিসেবে গত ১৫ মে থেকে ১৬ জুলাই রবিবার পর্যন্ত মাদকবিরোধী অভিযানে নিহত হয়েছে ২০২ জন। কিন্তু এসব মৃত্যুর ঘটনায় কারা জড়িত কিংবা আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিবরণই সত্যি কি না – সেটি এখনো জানা যায়নি। যদিও কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে প্রতিটি ঘটনাই তদন্ত করে দেখা হয় বলে বলা হয়েছে।
তবে কর্তৃপক্ষ যাই বলুন, এ অভিযানটি বড় প্রশ্নের মুখে পড়ে গত ২৬ মে টেকনাফের কাউন্সিলর একরামুল হক হত্যার পর পরিবারের পক্ষ থেকে একটি অডিও প্রকাশের পর। একরামুল হকের স্ত্রী আয়েশা বেগম তার স্বামীর মৃত্যুর জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দায়ী করেছিলেন।
এরপর সরকারের পক্ষ থেকে এই হত্যার তদন্তের কথা বলা হলেও এখনও কোন তথ্য দেয়া হয়নি।
মাদকবিরোধী অভিযানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল মঙ্গলবার ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, পাঁচটি গোয়েন্দা সংস্থার সমন্বয়ে তৈরি করা তালিকায় যাদের নাম মিলে যাচ্ছে তাদেরই কেবল আটক করা হচ্ছে, এক্ষেত্রে কোনো ধরনের ক্রসফায়ারের অভিযোগও প্রত্যাখ্যান করেন তিনি।
অন্যদিকে, বদিকে নিয়ে সরকারের অবস্থান জনমতে ক্ষোভ দেখা গেছে। আমাদেরসময়.কম এর অনেক পাঠক ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। বিশিষ্টজনেরাও এনিয়ে অনেক লেখালেখি করেছেন। তারপরেও বদির বিরুদ্ধে সরকার কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। তারা মনে করেন, মাদকবিরোধী অভিযান অনেক আগেই প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। বিশেষ করে ইকরামুল হকের হত্যা ও ইয়াবা সম্রাট এমপি বদির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ায় সারাদেশে সমালোচনা বর্তমানে। আমাদের সময় ডটকম
Posted ১৪:২৯ | বুধবার, ১৮ জুলাই ২০১৮
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain