বৃহস্পতিবার ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

উন্নয়নের অদম্য গতি অব্যাহত রাখতে চাই: প্রধানমন্ত্রী

  |   রবিবার, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ | প্রিন্ট

উন্নয়নের অদম্য গতি অব্যাহত রাখতে চাই: প্রধানমন্ত্রী

দেশে উন্নয়নের যে অদম্য গতি সেটা অব্যাহত রাখতে চান বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেজন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করে একটি সমন্বিত যোগাযোগব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় তাঁর সরকার কাজ করছে বলে বলে জানান শেখ হাসিনা।

 

আজ (৪ সেপ্টেম্বর) সকালে পিরোজপুরের ‘বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব ৮ম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। নিজ কার্যালয়ের চামেলী হল থেকে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী।

 

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা জানি যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়ন, বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি একটি দেশের অগ্রগতির জন্য অপরিহার্য। ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে আমরা এই বিষয়গুলো মাথায় রেখে কাজ করে যাচ্ছি।

 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি নিশ্চিত করতে এবং জনসাধারণের বিশেষ করে তৃণমূলের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করে যাচ্ছে।

 

দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে তাঁর সরকারের উদ্যোগের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, আমরা চাই দেশের উন্নয়নের গতি অব্যাহত থাকুক।

 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে বঞ্চিত ছিল। কারণ তাদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অনেক খরস্রোতা বড় বড় নদী পাড়ি দিয়ে জীবিকা ও চিকিৎসার জন্য রাজধানীতে আসতে হতো। আমি ১৯৯৬ সালে বরিশালের সঙ্গে ঢাকার যোগাযোগের জন্য শিকারপুর-দোয়ারিকা সেতু নির্মাণ করে দিই এবং কীর্ত্তনখোলার ওপর ব্রিজ নির্মাণের কাজ হাতে নিই।

 

জনগণ পিরোজপুরের তাজা পেয়ারা এবং আমড়া রাজধানীতে বসেই পাবে। এই অঞ্চলের শীতল পাটিও বিখ্যাত। জেলার বাসিন্দারা অন্যান্যদের পাশাপাশি খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প স্থাপন করতে পারে যা জেলা ও অঞ্চলের আর্থ-সামাজিক অবস্থার পরিবর্তনে ব্যাপক অবদান রাখবে।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

 

শেখ হাসিনা বলেন, গাবখান ব্রিজও আমাদের সরকারেরই করা। পাশাপাশি উত্তরবঙ্গের সঙ্গে যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়নেও একের পর এক সেতু আমরা করে দিয়েছি।

 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পিরোজপুরের বেকুটিয়ায় কচা নদীর উপর বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব অষ্টম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু উদ্বোধনের ফলে ঢাকার সঙ্গে পিরোজপুরের সরাসরি যোগাযোগ স্থাপিত হয়েছে। তিনি বলেন, জনগণ পিরোজপুরের তাজা পেয়ারা এবং আমড়া রাজধানীতে বসেই পাবে। এই অঞ্চলের শীতল পাটিও বিখ্যাত। জেলার বাসিন্দারা অন্যান্যদের পাশাপাশি খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প স্থাপন করতে পারে যা জেলা ও অঞ্চলের আর্থ-সামাজিক অবস্থার পরিবর্তনে ব্যাপক অবদান রাখবে।

 

দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার জন্য সরকারের পদক্ষেপের অংশ হিসেবে তাঁরা পায়রা বন্দরের উন্নয়ন করবেন জানিয়ে তিনি বলেন, অর্থনৈতিক অগ্রগতি বাড়াতে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে আধুনিক পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে সরকার। দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি ত্বরান্বিত করতে আমরা আধুনিক পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়ন করছি।

 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার ৭১৮ কিলোমিটার মহাসড়ককে চারলেন বা তার উপরে উন্নীত করার মাধ্যমে সারাদেশে মহাসড়কের মোট দৈর্ঘ্য ২২,০০০ কিলোমিটারে উন্নীত করেছে, পাশাপাশি ৬০০ কিলোমিটার মহাসড়ককে চারলেন বা তার উপরে লেনে পরিণত করার কাজ চলছে।

 

তিনি বলেন, সরকার ঢাকায় মেট্রোরেল ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প, গাজীপুর থেকে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার র‌্যাপিড বাস ট্রানজিট, চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে বঙ্গবন্ধু টানেল এবং ১০ লেনের টঙ্গী সেতু নির্মাণসহ বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এই প্রকল্পগুলো সম্পন্ন হলে আমাদের অর্থনীতি আরও গতি পাবে।

 

২০১৮ সালের ১ নভেম্বর সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। সড়ক ও জনপথ বিভাগ ৮৯৪.০৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব ৮ম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু’ নির্মাণ করে।

 

চীন সরকার সেতুটির জন্য প্রকল্প সহায়তা হিসেবে ৬৫৪ দশমিক ৮০ কোটি এবং বাংলাদেশ সরকার ২৩৯ দশমিক ৮০ কোটি টাকা ব্যয় করেছে ।

 

সেতুটি কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত, পায়রা গভীর সমুদ্র বন্দর, মংলা সমুদ্র বন্দর এবং দেশের বৃহত্তম স্থলবন্দর বেনাপোলের মধ্যে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপনে সহায়তা করবে।

 

অনুষ্ঠানে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং বাংলাদেশে চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং বক্তৃতা করেন। সড়ক পরিবহন ও সহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নূরী অনুষ্ঠানে একটি পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন করেন। প্রকল্পের ওপর একটি ভিডিও চিত্রও অনুষ্ঠানে প্রদর্শিত হয়। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।

 

এ উপলক্ষে বঙ্গমাতা সেতু এলাকায় পশ্চিম এবং পূর্বপাড়ে দুটি সমাবেশের আয়োজন করা হয়। পশ্চিমপাড়ে পিরোজপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম ও পূর্বপাড়ে সাবেক যোগাযোগ মন্ত্রী পিরোজপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন মঞ্জু উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী পরে প্রকল্প এলাকার জনগণের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ০৯:২১ | রবিবার, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২২

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com