শুক্রবার ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

আল-কোরানের মুজিঝা ও রহস্য

  |   রবিবার, ২৩ মার্চ ২০১৪ | প্রিন্ট

আল-কোরানের মুজিঝা ও রহস্য

quran

মুজিঝা নং- ৫৪ : উদ্ভিদ থেকে অক্সিজেন উৎপাদন

যিনি সবুজ বৃক্ষ থেকে তোমাদের জন্য আগুন উৎপন্ন করেন। তখন তোমরা তা থেকে আগুন জ্বালাও। (ইয়াসিন, ৩৬ : ৮০)

চৌদ্দশ বছর পূর্বে জ্বলনের প্রক্রিয়া জানতে পারা মানুষের জন্য ছিল অসম্ভব। তার বহু শতাব্দী পর আবিষ্কৃত হয় যে, দাহ্য পদার্থে কার্বনের সঙ্গে অক্সিজেনের বিক্রিয়ার ফলেই জ্বলন প্রক্রিয়া সংগঠিত হয়। কোরান মাজিদ এই রহস্য উদঘাটন করেছে চৌদ্দশ বছর পূর্বে। পবিত্র আয়াতটি গাছের মধ্যে সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ার বর্ণনা দেয়। গাছের সবুজ উপাদান হল ক্লোরোফিল। এখন এটা অজানা নয় যে, ক্লোরোফিল বায়ুমন্ডল থেকে কার্বনডাই-অক্সাইড শুষে নেয় এবং পানির সহায়তায় তাকে কার্বোহাইড্রেডে রূপান্তরিত করে। ফলস্বরূপ অক্সিজেন নির্গত হয়। বস্ত্তত গাছের সবুজ অংশ বা ক্লোরোফিলই হল প্রধান এজেন্ট যা প্রকৃতিতে অক্সিজেন উৎপাদন ও তার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে। বলা বাহুল্য, অক্সিজেন ছাড়া কোনো আগুন জ্বলতে পারে না। পাশাপাশি ক্লোরোফিল যে কার্বোহাইড্রেড উৎপাদন করে তা মৌলিক কার্বন উপাদানের যোগান দেয়- যা সব ধরনের দাহ্য ক্রিয়ার দ্বিতীয় উপাদানের ভূমিকা পালন করে। এটি হুবহু তা-ই যা এই আয়াত বর্ণনা দেয়- যে আগুন তোমরা প্রজ্বলিত কর তা উৎপন্ন হয় সবুজ বৃক্ষ থেকে।

বিগত পৃষ্ঠাগুলিতে কোরান মাজিদের সেসব আয়াত পেশ করা হয়েছে যেগুলি প্রাণী ও উদ্ভিদজগতের সঙ্গে সম্পর্কিত। এ আয়াতগুলি আলোচিত হয়েছে কিছু বিশেষ শিরোনামে, যেমন- ‘সকল প্রকার জীবনের আদি উৎস পানি’, ‘প্রাণীদের মধ্যে জ্ঞাতি-গোষ্ঠীর অস্তিত্ব’, ‘জৈবিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রাণীদের প্রজনন’, ‘দুধের উৎস’, ‘মধুর উৎস’, ‘সবধরনের উদ্ভিদে বিপরীত লিঙ্গের উপস্থিতি’, বায়ুর মাধ্যমে উদ্ভিদের পরাগায়ন’, ইত্যাদি। বহু শতাব্দী পর্যন্ত মানুষ কোরান মাজিদের এই আয়াতগুলি পূর্ণরূপে অনুধাবন করতে পারে নি এবং এগুলিকে সাধারণভাবে কোরান মাজিদের রহস্য বলে গ্রহণ করেছিল। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সাম্প্রতিক উন্নয়ন ও অগ্রগতি মানুষকে এই আয়াতগুলি ব্যাখ্যা দিতে সক্ষম করেছে, তা আল্লাহ তাআলার নিরঙ্কুশ জ্ঞান ও ইচ্ছার সুস্পষ্ট বহিঃপ্রকাশ। বাস্তবতা হল এই আয়াতগুলি কোরান মাজিদে বিদ্যমান ছিল মানুষ বৈজ্ঞানিক ভিত্তিতে তা অনুধাবন ও ব্যাখ্যার ক্ষমতা অর্জন করার বহু পূর্বে- যা কুরআনের বিস্ময়কর প্রকৃতিকে আরো বেশি সুনিশ্চিত করে। এ কথা অবশ্যম্ভাবী যে, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যার কাছে না ছিল আবিষ্কার সংক্রান্ত কোনো জ্ঞান, না ছিল এসব তথ্য উদঘাটনের উপায়-উপকরণ, তিনি কোরান মাজিদে এ সকল আয়াত সন্নিবেশ করতে পারেন না। সর্বশক্তিমান, সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময় আল্লাহ তাআলাই এ ধরনের আয়াত কোরান মাজিদে সন্নিবেশিত করেছেন। যাতে বুদ্ধিমান ও বিবেচক লোকেরা তাঁর এই কিতাবকে তাঁর আসমানি নির্দেশনা হিসেবে গ্রহণ করতে পারে এবং এর নির্দেশনাসমূহ মেনে চলে।

আর বলুন (হে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুশরিক-পৌত্তলিক প্রমুখকে) সমস্ত প্রশংসা ও স্ত্ততিবাক্য আল্লাহর জন্য। তিনি (আল্লাহ) সত্বরই তাঁর নিদর্শনসমূহ (যা আছে তোমাদের মধ্যে এবং বিশ্ব পরিমন্ডলে) তোমাদের দেখাবেন। অতঃপর তোমরা তা চিনতে পারবে এবং (মনে রেখ) তোমরা যা কর সে সম্পর্কে আপনার পালনকর্তা অসতর্ক নন। (নামাল, ২৭ : ৯৩)

যদি আমি (আল্লাহ) এই কোরান পাহাড়ের ওপর অবতীর্ণ করতাম, তবে তুমি দেখতে পেতে যে, পাহাড় বিনীত হয়ে আল্লাহ তাআলার ভয়ে বিদীর্ণ হয়ে গেছে। আমি এসব দৃষ্টান্ত মানুষের জন্য বর্ণনা করি, যাতে তারা চিন্তা-ভাবনা করে। (হাশর, ৫৯ : ২১)

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১৮:২৩ | রবিবার, ২৩ মার্চ ২০১৪

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com