শুক্রবার ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

আন্তর্জাতিক নারী দিবস আজ

  |   শুক্রবার, ০৮ মার্চ ২০১৯ | প্রিন্ট

আন্তর্জাতিক নারী দিবস আজ

আজ ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস। ‘সবাই মিলে ভাবো, নতুন কিছু করো নারী-পুরুষ সমতার নতুন বিশ্ব গড়ো’-এই প্রতিপাদ্য নিয়ে বৃহস্পতিবার যথাযোগ্য মর্যাদায় আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালিত হবে।

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিবসটি উপলক্ষে পৃথক বাণী দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বলেন, বর্তমান সরকার নারী-পুরুষের সমতা বিধানে নারী শিক্ষার বিস্তার, নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা, নারীর ক্ষমতায়নসহ নারীর প্রতি সকল ধরণের সহিংসতা প্রতিরোধে ব্যাপক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে।

সরকার এসডিজি’র লক্ষ্য অর্জনের জন্য রাষ্ট্র ও জনজীবনের সর্বস্তরে নারী-পুরুষের সমান অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নারীর প্রতি সকল ধরনের বৈষম্যমূলক আচরণ ও প্রথা বিলোপ, নারী নির্যাতন প্রতিরোধসহ, কর্মক্ষেত্রে নারী-পুরুষের সমান মজুরি এবং নারী উদ্যোক্তাদের জন্য আলাদা ব্যাংকিং ব্যবস্থা ও বিপনন সুবিধা প্রদান করার বিষয়ে সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

দিবসটি উপলক্ষে সরকারি এবং বেসরকারি উদ্যোগে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহন করা হয়েছে। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ৯ মার্চ (শনিবার ) সকাল ৯ টার সময় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আলোচনা সভার আয়োজন করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। অনুষ্ঠানে নির্বাচিত শ্রেষ্ঠ ৫ জন জয়িতাকে পুরষ্কৃত করা হবে।

মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, দিবসটি উপলক্ষে আগামীকাল (৮ মার্চ) এবং ৯ মার্চ (শনিবার) দেশের সব জেলা শহরে নারী উদ্যোক্তাদের উৎপাদিত পণ্য প্রদর্শনী, মেলা এবং জনসচেতনতামূলক ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত হবে। কর্মসূচিতে সরকারি ও বেসরকারি সংগঠন এবং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করবেন। দিবসটির প্রতিপাদ্য তুলে ধরে প্রদর্শন করা হবে বিল বোর্ড, ফেস্টুন ও পোস্টার। সংবাদপত্রগুলো বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করবে।

দিবসটি উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাব এবং ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটি পৃথক কর্মসূচি গ্রহন করেছে। জাতীয় প্রেসক্লাব বিকেল পাঁচটায় ক্লাবের নারী সদস্যদের নিয়ে মতবিনিময় ও আলোচনা সভার আয়োজন করেছে। ডিআরইউ’র কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে শোভাযাত্রা এবং আলোচনা সভা। জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী দুই অনুষ্ঠানেই প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকবেন।

নারী দিবসের শুরু যেভাবে: আন্তর্জাতিক নারী দিবসের ইতিহাস সূচিত হয় ১৯০৮ সালে। সে বছর নিউইয়র্কে তৈরি পোশাক কালখানার নারী কর্মীরা কর্মক্ষেত্রের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর আন্দোলন করেন। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে কাজ করার কারণে তাদের মৃত্যুহার বেড়ে যাচ্ছিল। পারিশ্রমিকও ছিল পুরুষ শ্রমিকদের অর্ধেক। ভোট দেওয়ার অধিকারও ছিল না। ১৯১০ সালে ডেনমার্কের রাজধানী কোপেনহেগেনে কর্মজীবী নারীদের দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ১৭টি দেশের শ্রমিক সংগঠন, সমাজতান্ত্রিক দলগুলোর প্রতিনিধি ছাড়াও ফিনল্যান্ডের পার্লামেন্টে নির্বাচিত প্রথম তিন নারী সদস্য সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

ক্লারা জেতকিন নামের এক নারী নেত্রী সম্মেলনে আন্তর্জাতিকভাবে নারী দিবস পালনের প্রস্তাব করেন। জার্মানির সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টির নারী কার্যালয়ের নেত্রী ছিলেন ক্লারা। নারী অধিকারের ওপর জোর দেওয়ার জন্য প্রত্যেক দেশে প্রতিবছর অন্তত একটি দিন নারী দিবস হিসেবে পালনের প্রস্তাব দেন তিনি। সম্মেলনে উপস্থিত প্রায় ১০০ নারী প্রতিনিধি সর্বসম্মতভাবে তার প্রস্তাব মেনে নেন। ক্লারা জেতকিনের নেতৃত্বে ১৯১১ সালের ১৯ মার্চ প্রথম নারী দিবস পালিত হয়। এ দিনটিকে বেছে নেওয়ারও পেছনে কারণ ছিল। জার্মানকেন্দ্রিক প্রুসিয়ান সম্রাট অনেক অঙ্গীকার দিয়েও সেগুলো পূরণে ব্যর্থ হয়ে বিপ্লবের মুখে পড়েন। নারীদের ভোটাধিকার দেওয়াও ছিল সেই অঙ্গীকারগুলোর মধ্যে অন্যতম।

১৮৪৮ সালের ১৯ মার্চ সংঘটিত বিপ্লবের কথা স্মরণ করেই এ তারিখটিকে নারী দিবসের জন্য বেছে নেওয়া হয়। প্রথম নারী দিবস পালনের সপ্তাহ খানেক আগে জার্মানির সাংবাদিকরা নারীদের ভোটাধিকার, কর্মজীবী নারী ও নাগরিক অধিকার, সমাজ ও সরকারে নারীর সমানাধিকার নিয়ে বেশ কিছু প্রতিবেদন লেখেন। এর ফলাফল আসে প্রত্যাশার চেয়েও বেশি। ১৯ মার্চ শহরগুলোর পাশাপাশি ছোট ছোট গ্রামেও সমাবেশ করেন নারীরা। আর ওই দিন পুরুষরা সন্তানসহ বাড়িতে অবস্থান করেন। ১৯১৩ সালে আন্তর্জাতিক নারী দিবসের তারিখ পরিবর্তন করে ৮ মার্চ করা হয়।

১৯৭৫ সালে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসাবে ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি প্রদান করা হয় । জাতিসংঘ দিবসটি পালনের জন্য বিভিন্ন রাষ্ট্রকে আহ্বান জানায়। এরপর থেকে সারা পৃথিবী জুড়েই এই দিনটি নারী দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে।

জাতিসংঘ ১৯৭৫ সালে আন্তর্জাতিক নারী দিবসকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেওয়ার পর চীন, রাশিয়া, ভিয়েতনামসহ প্রায় ১৫টি দেশ এ দিবসকে জাতীয় ছুটির দিন হিসেবে পালন করছে। নারী-পুরুষ সমান অধিকার আন্দোলনকে বেগবান করতেই ১৯১১ সালের ১৯ মার্চ প্রথম আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালিত হয়। তবে ১৯১৩ সাল থেকে ৮ মার্চ বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালিত হয়ে আসছে।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ০১:১৫ | শুক্রবার, ০৮ মার্চ ২০১৯

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর

Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com