| বৃহস্পতিবার, ২৩ মার্চ ২০১৭ | প্রিন্ট
উপকূলীয় জেলা বরগুনার আমতলী ও তালতলীর উপকুলের সাধারন মানুষরা প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঝুঁকির মধ্যে বসবাস করে।
এ দুই উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি তৎপর থাকলে প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ কমানো সম্ভব। তবে এসব এলাকায় সক্রিয় নেই দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি।
আবহাওয়ার পূর্বাভাস ও সতর্ক সংকেত জানান, দুর্যোগকালীন প্রতিরোধ ও পরবর্তীতে প্রতিকারে কার্যকর ব্যবস্থা নেবার সরমঞ্জামাদি নেই ওসব এলাকায়। দুর্যোগ প্রতিরোধ দিবস পালন ও জেলা-উপজেলা সদরে রুটিন সভার মধ্যেই সীমাবদ্ধ উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির কাজও।
ফলে প্রাকৃতিক দুর্যোগে আঘাত হানলে তার ক্ষত নিরসনে বছরের পর বছর কেটে যায় ক্ষতিগ্রস্থদের। ইউনিয়ন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি কার্যকর এবং ওইসব কমিটির হাতে প্রয়োজনীয় সরমঞ্জামাদি দেয়া এখন সময়ের দাবি। সর্বশেষ, গত বছরের মে মাসের শেষ দিকে রোয়ানু অল্প পরিসরে আঘাত হেনেছিল উপকূলীয় অঞ্চলে। এর আগে, ঘূর্ণিঝড় মহাসেন, সিডর ও আইলা পর্যায়ক্রমে আঘাত হেনেছিল।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বঙ্গোপসাগর উপকূল ও সুন্দরবন ঘেঁষা এ দুই উপজেলায় সাধারণত নদী ভাঙন, কাল বৈশাখী, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছাস ও অতিবৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এসব প্রাকৃতিক দুর্যোগে জান-মালের ক্ষয়-ক্ষতি সর্বনিম্ন পর্যায়ে কমিয়ে আনা সম্ভব দুর্যোগ-পূর্ব ও পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে। লজিস্টিক সাপোর্টসহ স্বেচ্ছাসেবী লোকবল প্রস্তুত রাখা, নিম্নচাপ সংক্রান্ত আবহাওয়া দপ্তরের জারিকৃত বুলেটিন শোনা এবং তদানুযায়ী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ সে অনুযায়ী জনগণকে জানানো, পরামর্শ দেয়া, দুর্যোগ কালীন সময়ে ক্ষতিগ্রস্থদের নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে আসা, তাদের খাদ্য সংস্থানের প্রয়োজন হলে যথাসম্ভব সেটা করা। প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা থাকা। দুর্যোগ সংক্রান্ত স্থায়ী আদেশাবলী অনুসরণে ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলা সদরে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খুলে পরিস্থিতির ওপর সজাগ দৃষ্টি রাখা। সাইক্লোন শেন্টার সমূহ রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে দুর্যোগ সহজে মোকাবেলা করা যেতে পারে। এ জন্য প্রথমেই প্রয়োজন উপজেলা ও ইউনিয়ন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটিকে সক্রিয়করণ।
তালতলী উপজেলার সর্ব দক্ষিণ সোনাকাটা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ ইউনুস ফরাজী বলেন, “প্রায় প্রতি বছরই প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থ এই এলাকার মানুষ। আইলা-সিডরের ক্ষত এখনো কাটিয়ে উঠতে পারিনি তারা। ইউনিয়ন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি সক্রিয় করে তাদের হাতে দুর্যোগকালীন প্রয়োজনী যেমন, রেডিও, মাইক-বাঁশি, ছাতা-ওয়াটার প্রুপ পোশাক, জলযান, প্রাথমিক চিকিৎসা সরমঞ্জামাদি দিলে প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতি কমানো যাবে। মনে রাখতে হবে এ এলাকার বিশাল জনগোষ্ঠী আকাশে মেঘ দেখলেও ভয় পায়।”
তালতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ ঈসরাইল হোসেন বলেন, “দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটিগুলো সক্রিয় করতে উদ্যোগ নিয়েছি।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মুশফিকুর রহমান বলেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটিগুলো সক্রিয় করতে কাজ করে যাচ্ছি। উপকূলীয় জনগোষ্ঠীর সচেতনতা সৃষ্টিতে স্থানীয়দের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
উল্লেখ্য, ২০০৭ইং সালের ১৫ নভেম্বর ঘূর্ণিঝড় সিডরে এবং ২০০৯ইং সালের ২৫ মে প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় আইলার জলোচ্ছাসে লন্ডভন্ড হয়ে যায় দক্ষিণ জনপদের উপকূলীয় অঞ্চল। পর্যাপ্ত সাইক্লোন শেন্টারের অভাবেই অনেক প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। সর্বশেষ, গেল বছর ২০ মে উপকূলে অপেক্ষাকৃত অল্প পরিসরে আঘাত হেনেছিল রোয়ানু।
অবশ্য নতুন সাইক্লোন শেন্টার নির্মাণ ও পুরনোগুলো সংস্কারে পদক্ষেপ নেয়ার কথা জানালেন বরগুনা জেলা প্রশাসক ডঃ মহা বশিরুল আলম তিনি বলেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটিগুলো চাঙ্গা করতে কাজ করছি। উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের এ বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছি। তিনি আরো বলেন, যথা সময়ে সঠিক পদক্ষেপ নিলে প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষয়-ক্ষতি কমানো যায়। সে জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির গুরুত্ব ব্যাপক। একই সাথে সচেতনতা সৃষ্টিতে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।
Posted ০৭:১০ | বৃহস্পতিবার, ২৩ মার্চ ২০১৭
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain