শুক্রবার ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

‘আগে জানলে জীবনবাজি রেখে যুদ্ধ করতাম না’

  |   বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০১৩ | প্রিন্ট

freedom fighter

ঢাকা: জীবনবাজি রেখে যিনি দেশ মাতার জন্য যুদ্ধ করেন সেই বীর সেনানী মানুষটি তার জীবন যুদ্ধে পরাজিত হয়ে চলে গেলেন শেষ ঠিকানায়। বৃহস্প্রতিবার দুপুরে একরকম বিনা চিকিৎসায় এই দুনিয়া ছেড়ে চলে যেতে হলো তাকে। যার ত্যাগের বিনিময়ে আজ লক্ষকোটি মানুষ পেয়েছে একটি স্বাধীন দেশ সেই মানুষটি জীবনের শেষ সময়ে এসেও পাননি যথাযোগ্য মর্যাদা। প্রতিদিনকার আর্থিক অনটন, দুঃখ আর কষ্টের গাথা ছিল তার জীবন সংসার।
মৃত্যু কয়েক দিন আগে তার সঙ্গে কথা হয়েছিল বিজয়ের মাস উপলক্ষে বাংলামেইলের ধারাবাহিক সাক্ষাৎকার পাতা ‘বিজয়ের বাঁশি’ এর প্রতিবেদকের। জীবনের শেষ বেলায় তীব্র ক্ষোভ, দুঃখ আর হতাশার কথা জানান তিনি।
এই মুক্তিযোদ্ধার নাম মো. তাজুল ইসলাম (৯০), সনদ নং ০৩০২০৩০২৫৫। ফরিদপুর জেলার বোয়লমারি থানার এক গ্রামে। ফরিদপুর জেলার ভাটিয়াপাড়া বাজার, নড়িয়া খালি, গোপালগঞ্জ এলাকায় পাকিস্তানি সেনাদের সঙ্গে যুদ্ধ করেছেন। তাদের প্রতিরোধেই বাধ্য হয়ে পাকহানাদার ও তাদের দোসররা আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়।
কিন্তু জীবনযুদ্ধে পরাজিত তাজুল ইসলাম। যুদ্ধের পরে যমুনা নদী একদিন পাক সেনাদের মতোই গ্রাস করে নেয় তার ভিটে বাড়ি। নদী ভাঙনের কবলে পড়ে ২৫ বছর আগে গ্রামের বাড়ি ছেড়ে সাত ছেলে মেয়ের সংসার নিয়ে চলে আসেন রাজধানী ঢাকার কল্যাণপুরের পোড়া বস্তিতে। এখন অবশ্য ছেলে মেয়েদের আলাদা সংসার। সংসার চলে স্ত্রীর পিঠা বেচা আর তার দুই হাজার টাকা ভাতায়। এতে কোনো রকম খাওয়া পরা চলে কিন্তু ওষুধ কেনার মতো টাকা জমাতে পারেন না তিনি।
সেখানেই তার সঙ্গে যুদ্ধকালীন ও চলমান পরিস্থিতি নিয়ে কথা হয়। সংঘাত আর ক্ষমতার রাজনীতি নিয়ে তিনি অতিষ্ট। স্বাধীন করে দেশটা যাদের হাতে তুলে দিয়েছেন তারা এখন ভাগাভাগি নিয়ে মারামারি করছে। তাই তিনি ক্ষোভের সাথে বলেন, ‘আগে যদি জানতাম তাইলে জীবন বাজি রেখে আজকের এই বাংলার জন্য যুদ্ধ করতাম না’।
কোথায় যুদ্ধ করেছেন কীভাবে যুদ্ধ করেছেন জানতে চাইলে একটু আনমনা হয়ে খানিকটা সময় নিয়ে বলেন, ‘যুদ্ধের কথা শুনে আর কী হবে? দেশটারেতো স্বাধীন করে দিয়েছি জীবন বাজি রেখে আজও কেউ হাল ধরতে পারলো না।’
যশোর জেলা থেকে ট্রেনিং শেষ করে তাজুল ইসলাম যোগ দেন মুক্তিবাহিনীতে।
বয়সের ভারে ন্যুব্জ তাজুল বিস্তারিত কিছু বলতে পারেননি। যাও বলার চেষ্টা করেছেন তা অস্পষ্ট। আর বয়সের কারণে অথবা কঠিন বাস্তবতার নিষ্ঠুর কষাঘাতে সেসব স্মৃতির অনেক কিছুই আজ ভুলে গেছেন।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১৮:৩৩ | বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০১৩

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com