| বৃহস্পতিবার, ০১ জুলাই ২০২১ | প্রিন্ট
আইনমন্ত্রীর কথায় সরকারের রাজনৈতিক প্রতিহিংসা প্রকাশ পেয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত দফতর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সাহেল প্রিন্স। বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) দুপুরে নয়াপল্টনে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
প্রিন্স বলেন, জাতীয় সংসদে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের বক্তব্যের প্রতি আমাদের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে। তিনি তার বক্তব্যে ‘দোষ স্বীকার করে ক্ষমা চাওয়া ছাড়া বিএনপি চেয়ারপার্সন সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সু-চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাওয়ার সুযোগ নেই’ বলে যা উল্লেখ করেছেন তাতে সরকারের রাজনৈতিক প্রতিহিংসা এবং বেগম খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার ক্ষেত্রে সরকারের ইচ্ছাকৃত প্রতিবন্ধকতার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।
তিনি বলেন, আইনমন্ত্রী ‘দোষ স্বীকার করে ক্ষমা না চাইলে বিদেশে যাওয়ার’ সুযোগ দেখছেন না, কিন্তু বেগম খালেদা জিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে তার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিয়ে যেতে আবেদন করা হলে তিনি বলেছিলেন ‘সরকার যে শর্তে তাকে মুক্তি দিয়েছেন, সেই শর্ত শিথিল করলে খালেদা জিয়ার বিদেশে যেতে আইনগত কোনো বাধা থাকে না। এটা নির্ভর করছে একেবারেই সরকারের সিদ্ধান্তের উপর’ এবং তিনি আরো বলেছিলেন, ‘সরকার বিষয়টি ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখছে’। আইনমন্ত্রীর এই বক্তব্য দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমে সেসময় ফলাও করে প্রচারিত হয়েছিল। কিন্তু ২/১ দিন পরই তিনি ইউটার্ন নিয়ে বলেছেন, ‘সম্ভব নয়’ এবং এখন বলছেন ‘ক্ষমা চাইতে হবে’। এগুলো সরকারের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বহিঃপ্রকাশ এবং রাজনীতিকে নিয়ন্ত্রিত ও কলুষিত করার ব্যর্থ চেষ্টা ছাড়া কিছুই নয়।
প্রিন্স বলেন, যিনি কোনো অপরাধই করেন নাই তার ক্ষমা চাওয়ার কোনো প্রশ্নই আসে না। আইনমন্ত্রীর এই বক্তব্যের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদী সরকারের হীন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যের প্রতিফলন ঘটেছে, যা ভ্রষ্টাচার ছাড়া কিছুই নয়।
তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলন সরকার ফ্যাসিবাদী কায়দায় দমন করতে যারপরনাই চেষ্টা করেছে এবং এখনও তা অব্যাহত রেখেছে। করোনা প্রাদুর্ভাবের প্রারম্ভে পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে সরকার শর্তসাপেক্ষে তাদের দেয়া ফরমায়েশি রায় স্থগিত করে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিলেও কার্যত তিনি গৃহবন্দী। সরকার প্রথম দফায় বেগম খালেদা জিয়াকে বাসায় থেকে চিকিৎসার শর্ত দিলেও পরবর্তীতে বাংলাদেশের যেকোনো হাসপাতালে চিকিৎসার শর্ত দেয়।
তিনি আরও বলেন, বেগম খালেদা জিয়া বর্তমানে অসুস্থ। তিনি কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে এভারকেয়ার হাসপাতালে ৫৩ দিন চিকিৎসাধীন ছিলেন। এ সময় তার স্বাস্থ্যগত পরিস্থিতি কতটা জটিল এবং শোচনীয় ছিল তা তার চিকিৎসকরা ইতোমধ্যেই জানিয়েছেন। বেগম খালেদা জিয়ার কোভিড পরবর্তী জটিলতা নিরসন হলেও বর্তমানে তিনি লিভার, কিডনি ও হার্টের বিভিন্ন জটিলতায় তীব্র অসুস্থ অবস্থায় নিজ বাসভবনে চিকিৎসাধীন আছেন। তার চিকিৎসার জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের দ্বারা গঠিত মেডিকেল বোর্ড উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে আরও উন্নত সেন্টারে চিকিৎসার পরামর্শ দিয়েছেন। যা বাংলাদেশে সম্ভব নয়।
প্রিন্স বলেন, আমরা সরকারকে ছলচাতুরি ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসা পরিহার করে বাংলাদেশের সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় নেত্রী, তিনবারের প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে তার সুচিকিৎসার জন্য বিদেশে যাবার ক্ষেত্রে কোনো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না করার জন্য পুনরায় আহ্বান জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভেকেট আব্দুস সালাম আজাদ, সহ-দফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, বেলাল আহমেদ, ছাত্রদলের দফতর সম্পাদক আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
Posted ১৫:২০ | বৃহস্পতিবার, ০১ জুলাই ২০২১
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain