বৃহস্পতিবার ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অতিথি পাখি শিকারিদের বিরুদ্ধে নেই কোন দৃশ্যমান উদ্যোগ

  |   রবিবার, ২৪ জানুয়ারি ২০২১ | প্রিন্ট

অতিথি পাখি শিকারিদের বিরুদ্ধে নেই কোন দৃশ্যমান উদ্যোগ

শীতের প্রকোপ যতই বাড়ছে, ততই বাড়ছে পাখির সংখ্যা। অতিথি পাখির আগমনে মুখরিত রাঙামাটির হ্রদ-পাহাড়। শীতপ্রধান দেশ থেকে এসেছে রঙ-বেরংয়ের নানা প্রজাতির পাখি। এসব পাখি দেখতে যেমন সুন্দর, তেমনই আকর্ষণীয় তাদের খুনসুটি। শুধু শীত এলেই দেখা মিলে এদের।  রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদের ডুব চরে এখন পাখির নীড়। দল বেঁধে হ্রদের মাছ শিকারে ব্যস্ত পাখির দল। ভোর হলে কাপ্তাই হ্রদের স্বচ্ছ জলে দেখা মিলে পাখির মেলা। কখনো হ্রদের বুকে ডুব সাঁতার দিয়ে কখনো ঝাঁক বেঁধে আকাশের নীলে । সন্ধ্যার আকাশে গোধূলির সোনালি রঙ ছড়ালে শুরু হয় পাখিদের মিছিল। কিচির-মিচির ছন্দের তালে সারি বেঁধে ফিরে যায় অস্থায়ী নিড়ে। পাখিদের এমন বিষ্ময়কর সৌন্দর্য এখন শুধু পাহাড়েই দৃশ্যমান।

রাঙামাটির হ্রদ-পাহাড় ঘুরে দেখা যায় সুদূর সাইবেরিয়াসহ বিভিন্ন শীতপ্রধান দেশ থেকে পাহাড়ে এসেছে ফ্লাইফেচার, জলকুট, পর্চাড, জলপিপি, পাতারী, গার্নিগি, পাস্তামূখী, নর্দানপিন্টেলসহ নানা প্রজাতির পাখি। অতিথি পাখীদের সাথে যোগ দিয়েছে দেশীয় সরালি, ডাহুক, পানকৌড়ি, বক, বালিহাঁসসহ নাম অজানা হাজারো প্রজাতির পাখি।
পাহাড়, বন ও স্বচ্ছ জলধারা অতিথি পাখিদের বেশি আকর্ষণ করে। তাই শীত এলেই খনিকের জন্য পাহাড়, বন-জঙ্গল হয়ে উঠে ওদের  নিরাপদ অভায়শ্রম। পাখিদের এমন কলতান ও অভূতপূর্ব সৌন্দর্য উপভোগ করতে স্থানীয়দের সাথে ছুটে যাচ্ছে দূর-দুরান্ত থেকে আসা প্রকৃতিপ্রেমী পর্যটকরাও।

তথ্য সূত্রে জানা গেছে, শুধু রাঙামাটি শহর নয়, অতিথি পাখির দেখা মিলছে জেলার সুবলং, লংগদু, কাট্টলী, মাইনিমুখ, সাজেক, বাঘাইছড়ি, হরিণা, বিলাইছড়ি ও বরকলে। এসব উপজেলায় পাখির কলরবে কানায় কানায় ভরে গেছে হ্রদের তীর ও জলে ভাসা চরগুলো। খুব ভোরবেলা আর সন্ধ্যায় কাপ্তাই হ্রদে দেখা মিলে পাতিহাস, ডাহুক, কালাম, বক, ছোট সরালি, বড় সরালি, টিকি হাঁস, মাথা মোটা টিটি, চোখাচোখি, গাং চিল, গাং কবুতর, চ্যাগা ও জল মোরগ, বইধর।

অন্যদিকে অভিযোগ রয়েছে, প্রতি বছর শুধু শীত মৌসুমের জন্য পার্বত্যাঞ্চলে বিভিন্ন দেশ থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখি আসলেও তাদের নিরাপত্তার জন্য নেওয়া হয়নি দৃশ্যমান কোন উদ্যোগ। তাই অতিথি পাখি আসলে সক্রিয় হয়ে উঠে এখানকার পাখি শিকারিরা। নিরবে চলে তাদের পাখি নিধন কার্যক্রম।

তবে রাঙামাটি পার্বত্য চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের বন কর্মকর্তা রফিকুজ্জামান শাহ জানান, সাইবেরিয়া, মঙ্গোলিয়া, নেপাল ও হিমালয়ের উত্তরে শীত ও তুষারপাত শুরু হলে অতিথি পাখিরা বাংলাদেশের নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে চলে আসে। দেশের হাতে গোণা যে কয়েকটি এলাকায় এরা ক্ষণস্থায়ী আবাস গড়ে, তার মধ্যে অন্যতম পার্বত্যাঞ্চল। তাই পাখিদের সুরক্ষায় আমরা সজাগ। পাহাড়ি অঞ্চলগুলোতেও সবাইকে সর্তক করা হয়েছে যাতে কেউ পাখি শিকার না করে। পাখি শিকার আইনত অপরাধ। কেউ এ অপরাধ করলে বন্য প্রাণী সুরক্ষা আইনে তাদের শাস্তি পেতে হবে। অক্টোরের শেষ ও নভেম্বরের প্রথম দিকে রাঙামাটিতে অতিথি পাখি দেখা যায়। মার্চের শেষদিকে ওরা ফিরে যায় নিজ নিজ দেশে। এরা আমাদের দেশের অতিথি। তাদের নিরাপত্তা দেওয়া সবার দায়িত্ব-কর্তব্য। পাখি নিধনের সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান রয়েছে। পাখি নিধনের প্রমাণ পাওয়া গেলে আইনত কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বিডি প্রতিদিন/

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১৪:৩৭ | রবিবার, ২৪ জানুয়ারি ২০২১

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com