বৃহস্পতিবার ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অক্টোবরে আঁটঘাট বেঁধে নির্বাচনী মাঠে নামছে বিএনপি

  |   শুক্রবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ | প্রিন্ট

অক্টোবরে আঁটঘাট বেঁধে নির্বাচনী মাঠে নামছে বিএনপি

আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে আইনগত প্রক্রিয়ায় বিএনপির কারাবন্দী চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি পাওয়ার বিষয়টি একদিকে যেমন ক্ষীণ হয়ে আসছে। অন্যদিকে চলতি মাসে বহুল আলোচিত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায় হতে পারে। সেই রায়ে বিএনপির প্রথম সারির একাধিক নেতার দণ্ডিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এমন বাস্তবতায় কারাবন্দী চেয়ারপারসনের মুক্তি ও দল নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের দাবিতে নভেম্বরের শুরুতেই আন্দোলনে যাচ্ছে বিএনপি। অনেকবার আন্দোলনের নামার হুঙ্কার দিয়ে আসা দলটি এবার আঁটঘাট বেঁধেই নির্বাচনী মাঠে নামছে।

তিন মাসেরও কম সময় বাকি থাকা একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ‘নির্বাচনকালীন সরকার’ গঠিত হবে চলতি মাসের মধ্যেই। তাই নির্বাচনের দিন যত ঘনিয়ে আসছে বিএনপি নেতাদের মধ্যে চিন্তাও তত বাড়ছে।

দলটির একাধিক শীর্ষ নেতারা বলেছেন, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে বিএনপি যে ভুলগুলো করেছিল এবার তার পুনরাবৃত্তি যেন না হয় সেদিকেও সজাগ দলটির নেতৃবৃন্দ। বরং নিজেদের ভুলগুলো পর্যালোচনা করে ইতোমধ্যে কর্মপরিকল্পনা ঠিক করেছে বিএনপি ও তার জোট।

শিগগিরই সারা দেশে ইউএনও অফিস, নির্বাচন কমিশন কার্যালয়, থানা এবং ডিসি অফিস ঘেরাও করার কথাও ভাবছে বিএনপি। আর এসব কর্মসূচি পালনের এক পর্যায়ে গিয়ে হরতাল এবং অবরোধের ডাক দেয়ার চিন্তা-ভাবনা আছে দলের অভ্যন্তরে। বিএনপির নির্ভরযোগ্য সূত্র এমনটা নিশ্চিত করেছে।

সূত্র জানায়, আন্দোলন এবং নির্বাচনী প্রস্তুতি একইসঙ্গে- দুই পথেই হাঁটছে বিএনপি। সেক্ষেত্রে যাকে প্রার্থী করা হবে, তার নেতৃত্বেই আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। এ অবস্থায় যদি তড়িঘড়ি করে আগেভাগেই নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করা হয় এবং নির্বাচন কমিশন যদি তফসিল ঘোষণা করে তাহলে বিএনপির নির্বাচনী প্রচারণা কীভাবে হবে- এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে খোদ নেতাকর্মীদের মাঝে।

অন্যদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ইতোমধ্যে তাদের নির্বাচনী ইশতেহার তৈরির কাজ প্রায় শেষ করেছে। ২০৪১ সালকে সামনে রেখে আধুনিক শিক্ষা, কর্মসংস্থান, প্রশাসন ও সেবাখাতের বিকেন্দ্রিকরণকে সবচেয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে তাদের নতুন ইশতেহারে। প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচটি ইমাম এমন তথ্য জানিয়েছেন।

তবে বিএনপি এখনো নির্বাচনী ইশতেহার তৈরি করতে পারেনি। দলটির নীতিনির্ধারকরা মনে করছেন, এতিহ্য অনুযায়ী নির্বাচনের আগে সরকারবিরোধী আন্দোলন গড়তে পারলে জনগণের সমর্থন পাওয়া যায়। এ জন্য। ইতোমধ্যে কারাগারে খালেদা জিয়ার জন্য আদালত স্থাপনের প্রতিবাদে দুদিনের কর্মসূচিও দিয়েছেন তারা। এ ছাড়া সরকারের সঙ্গে নেই এমন দলগুলোর সঙ্গেও ঐক্য গড়ে তুলতে প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন তারা।

আন্দোলন প্রসঙ্গে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড.খন্দকার মোশাররফ হোসেন জানান, আমার দৃঢ় বিশ্বাস- এই ফ্যাসিস্ট ও স্বৈরাচার সরকারের পতনের আন্দোলন নোটিশ ও দিন-তারিখ ঠিক করে হবে না। জনগণই ফ্যাসিস্টদের পথরোধ করে দাঁড়াবে। আমরা জনগণের প্রতিনিধি হিসেবে জনগণের সঙ্গে থাকবো।

তিনি আরও বলেন, জনগণ আর বেশিদিন এই সরকারকে দেখতে চায় না। আগামী নির্বাচন যদি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হয় তবে আওয়ামীলীগ ৩০ আসনের বেশি পাবে না। গোয়েন্দাদের রিপোর্ট পাবার পর মাথা খারাপ হয়েছে। সরকার আতঙ্কে। যে কারণে মামলা দিয়ে চলেছে। আওয়ামীলীগ ছাড়া অন্য সকল দল ঐক্যবদ্ধ হয়েছে।

সামনের দিনের আন্দোলন-সংগ্রাম প্রসঙ্গে দলের অবস্থান তুলে ধরে দলটির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘আওয়ামী লীগের প্রকল্পের বিরুদ্ধে আজকে আমাদেরকেও (বিএনপির) প্রকল্প তৈরি করতে হবে। এই প্রকল্পের কাজ হবে, যেখানে গ্রেফতার করতে যাবে, সেখানেই প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। গ্রেফতার করে যে থানায় নিয়ে যাবে, সেই থানাও ঘেরাও করতে হবে।

বিএনপি আরেকটি সূত্র জানায়, নির্বাচনে বিএনপির যাওয়া উচিত, নাকি আন্দোলন একমাত্র পথ- এমন বিষয়ে দলের তৃণমূল নেতাদের সরাসরি মতামত নেওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন জেলা নেতাদের মোবাইল ফোনে কথা বলে তাদের মত জানতে চাচ্ছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এ ছাড়া একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে বিএনপিতে দ্বিমত থাকলেও অনেক আসনে প্রার্থীর মনোনয়ন ‘নিশ্চিত’ করা হয়েছে।

দলের ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, সর্বশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতি অর্থাৎ কারাগারের ভেতর আদালত স্থাপন বিষয়ে আমাদের ১০ সেপ্টেম্বরের বৈঠকে অর্থবহ আলোচনা হবে।

বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেন, চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের দাবি আদায় না করে নির্বাচনে গেলে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতোই একতরফা নির্বাচন হবে। এ ক্ষেত্রে আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই। পাশাপাশি নির্বাচনের জন্যও প্রস্তুত থাকতে হবে। ৩০০ আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের অবস্থা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছে আছে।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ২২:০৮ | শুক্রবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com