
| রবিবার, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ | প্রিন্ট
বিএনপি নামসর্বস্ব দল নিয়ে ঐক্য গড়ে আন্দোলনের হুমকি দিচ্ছে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, অতীতে মতো এবারও জনগণ এসবে সাড়া দেবে না।
আজ রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
এর আগে ‘সবুজ বাংলাদেশ : সমৃদ্ধ বাংলাদেশ’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ-এর বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপ-কমিটির উদ্যোগে তিন দিনব্যাপী ‘এনভায়রনমেন্টাল প্রটেকশন ফর সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক কনফারেন্সে সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন তিনি।
‘বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলো সঙ্গে আলোচনা শেষে এখন আন্দোলনের রূপরেখা ঘোষণা করবে বিএনপি’-দলটির নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন বক্তব্যের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এসব রাজনৈতিক দলের বাস্তবিক অর্থে কোনও অস্তিত্ব নেই। সাইনবোর্ডেই শুধু অস্তিত্ব। এসব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তারা সংলাপ করেছে। তারা এসব রাজনৈতিক দল নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করবে বলে ঘোষণাও দিয়েছে।
‘২০১৮ সালের নির্বাচনের আগেও এরকম একটা ঐক্য তারা করেছিল। ডান, বাম, অতি ডান, অতি বাম সবাইকে নিয়ে ঐক্য করেছিল। সেই ঐক্যের ফলাফল হচ্ছে বিএনপির ৫টি আসন। এখনও নামসর্বস্ব নিয়ে তারা যদি আন্দোলন করে সেটিও অতীতে যেমন জনগণ সাড়া দেয়নি, এবারও কোনও সাড়া দেবে না।’
আন্দোলনের নামে বিএনপি দেশে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায় মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘আমরা তাদের আন্দোলনের নমুনা এরই মধ্যে কিছুটা দেখেছি। সেটি হচ্ছে তাদের আন্দোলন করতে গিয়ে নিজেরা নিজেরা মারামারি করা, পুলিশের ওপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ, সারাদেশে একটি গণ্ডগোল করার অপচেষ্টা চালানো।’
‘তারা যদি অতীতের মতো দেশে এই ধরনের অপকর্ম আবার করতে চায়, যেভাবে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করার অপচেষ্টা চালানো হয়েছিল সেটি করা অপচেষ্টা চালায় যেটির আলামত আমরা গত কয়েকদিনে দেখেছি; তাহলে সরকার দুষ্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’
ড. হাছান বলেন, ‘রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগ যেহেতু দেশ পরিচালনা করছে আমাদেরও রাজনৈতিক দল হিসেবে দায়িত্ব আছে জনগণের সাথে থাকা এবং তাদের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। আমরাও জনগণকে সাথে নিয়ে দুষ্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলবো।’
‘নির্বাচনে মাঠ থেকে সরাতে পুলিশ দিয়ে হামলা করেছে’-বিএনপি এমন অভিযোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের মাঠ থেকে তো কেউ কাউকে সরাতে পারে না। নির্বাচন করবে নির্বাচন কমিশন।’
‘নির্বাচনের মাঠ থেকে ২০১৪ সালে তারা পালিয়ে গিয়েছিল। ’১৮ সালেও তারা নির্বাচনের মাঠ থেকে পালিয়ে গিয়ে নির্বাচনের ট্রেনের পাদানিতে চড়ে নির্বাচনে গিয়েছিলেন। এবার তারা নির্বাচনের ট্রেনের পাদানিতে চলবে নাকি ট্রেনে চড়বেন এই সিদ্ধান্ত তাদেরই নিতে হবে। আমরা চাই বিএনপি নির্বাচনে আসুক জনপ্রিয়তা যাচাই করুক।’
বিএনপি নেতাকর্মীদের চাঙা রাখতে আন্দোলনে জয়ী হওয়ার স্বপ্ন দেখাচ্ছে বলেও মন্তব্য করে তথ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘এজন্য মির্জা ফখরুল সাহেবের গলা সবসময় চড়া দেখতে পাচ্ছি। এটাও দেখছি তারা যে সভা সমাবেশগুলো করছে সেখানে মানুষ আস্তে আস্তে কমছে।’
নিরপেক্ষ সরকার না দিলে বিএনপি নির্বাচনে যাবে না বলে বিএনপি নেতাদের বক্তব্যের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘নির্বাচন কখনো সরকারের অধীনে হয় না। নির্বাচন হয় কমিশনের অধীনে। নির্বাচন কমিশন স্বাধীন প্রতিষ্ঠান।’
‘সংবিধান অনুযায়ী অন্যান্য সংসদীয় গণতান্ত্রিক দেশে যেভাবে নির্বাচনকালীন সরকার হয় অর্থাৎ যে সরকার ক্ষমতায় তারাই নির্বাচনকালীন সরকারের দায়িত্ব পালন করবে। আমাদের দেশেও তাই হয়, অন্য কোনও বায়না ধরে লাভ নেই। নির্বাচন হবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে। সেই নির্বাচনে আমরা আশা করবো বিএনপি পালিয়ে যাবো না।’
বিএনপির আন্দোলনের কারণে জনদুর্ভোগের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জে রাস্তা বন্ধ করে পুলিশের কোনও অনুমতি না নিয়ে তারা সমাবেশ করছিল। এমনকি সিটি কর্পোরেশন বা জেলা প্রশাসনের কোনও অনুমিত নেয়নি এবং তাদের যখন বারণ করা হলো তাদের পার্টি অফিসের সামনে করতে বললো তখন তারা পুলিশের ওপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করলো। পুলিশ বক্স ভাঙচুর করলো। অনেক পুলিশ আহত হলো।’
‘এভাবে তারা বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি চেষ্টা করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এই বিশৃঙ্খলা তাদের করতে দেওয়া হবে না। সরকারের পাশাপাশি আওয়ামী লীগকে জনগণের পাশে থেকে এগুলো প্রতিরোধ করতে হবে।’
এসময় নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
‘এনভায়রনমেন্টাল প্রটেকশন ফর সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক কনফারেন্সে উপস্থিত ছিলেন বন পরিবেশ বিষয়ক উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য ও পরিবেশ বিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. নাসরীন আহমাদ, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক এবং পানি সম্পদ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিশেষজ্ঞ আইনুন নিশাত।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপ-কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক খন্দকার বজলুর রহমান। সঞ্চালনা করেন আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন।
Posted ১৬:৪৯ | রবিবার, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২২
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain