
নিজস্ব প্রতিবেদক | রবিবার, ২০ নভেম্বর ২০২২ | প্রিন্ট
দেশে গণতন্ত্র ফেরানোর আন্দোলনে তারেক রহমানের নেতৃত্ব অপরিহার্য বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। রবিবার দুপুরে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন।
দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৫৮তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে বিএনপির উদ্যোগে নয়া পল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এরপর দুপুরে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে হয় মিলাদ মাহফিল।
সেখানে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের নেতা তারেক রহমানের সুস্বাস্থ্য, দীর্ঘজীবন ও তার সঠিক নেতৃত্বের দিকে গোটা বাংলাদেশের মানুষ তাকিয়ে আছে।’
বিএনপি নেতা বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনীতিকে পুরোপুরিভাবে একটা নতজানু রাজনীতিতে পরিণত করা, বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে বিপন্ন করা, গণতন্ত্রকে ধবংস করে দেওয়ার যে হীন চক্রান্ত, সেই চক্রান্ত থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য জনগণের মধ্যে একটা আকাংখা সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের সাতটি বিভাগীয় সমাবেশে মানুষের যে স্বতস্ফূর্ত অংশগ্রহণ, মানুষের যে আবেগ, মানুষের কষ্ট করে সামনে এগিয়ে আসা, মানুষের প্রাণ দেওয়া- এই ঘটনাগুলো থেকে বোঝা যায়, তারেক রহমান আমাদের জন্য কতটা অপরিহার্য।’
ফখরুল অভিযোগ করেন, ‘দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিনা কারণে তাকে সাজা দিয়ে আটক করে রাখা হয়েছে। ৩৫ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। হত্যা করা হচ্ছে, গুম করা হচ্ছে। তারপরও দেখেন মানুষের স্বাধীনতার জন্য, মুক্তির জন্য কতটা আবেগ, কতটা আকুতি। কেউ থেমে থাকছে না। শত বাধা-বিপত্তিকে উপেক্ষা করে মানুষ একাত্মতা ঘোষণা করছে এই মুক্তির আন্দোলনের সঙ্গে। আমরা জীবনপণ লড়াই করছি। আমাদের সামনে বিকল্প কোনো রাস্তা নেই। এই লড়াইয়ে, এই সংগ্রামে আমাদেরকে জয়ী হতে হবে- কোনো বিকল্প নেই। আপনাদের কাছে অনুরোধ করব, সবাই ঐক্যবদ্ধ হোন। জীবন বাজী রেখে এই সংগ্রামের নেমে পড়েন সবাই।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘চলমান আন্দোলনে ব্রাক্ষণবাড়িয়া, মুন্সিগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, ভোলা, যশোরে বিএনপির সাত জন নেতাকর্মীর প্রাণ হারিয়েছেন। তারা জীবন উৎসর্গ করেছেন দেশের মানুষের মুক্তির জন্য। আজকে সেই মুক্তি আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন তারেক রহমান। আমরা সবাই জানি কী নিদারুণ যন্ত্রণা, অত্যাচার-নির্যাতনের মধ্য দিয়ে এক-এগারোতে তাকে দেশ ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য করা হয়েছে। আমরা জানি তাকে অন্যায়ভাবে, বেআইনিভাবে গ্রেপ্তার করার পরে কারাগারে রেখে রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করে পঙ্গু করে ফেলা ও হত্যা করার ষড়যন্ত্র হয়েছিলে। আল্লাহর কাছে অশেষ রহমত তিনি বেঁচে আছেন। তিনি আমাদেরকে অনুপ্রাণিত করছেন প্রতি মুহুর্তে।
তারেক রহমানের দীর্ঘায়ু ও সুস্বাস্থ্য কামনা করে ফখরুল বলেন, ‘আজকের এই দিনটি আমাদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের নেতা দীর্ঘ জীবন, সুস্বাস্থ্য এবং একইসঙ্গে তিনি দেশে ফিরে এসে নেতৃত্ব দিতে পারেন এ জন্য আমরা দোয়া চাই। এই দোয়া আমরা চাইব, তার নেতৃত্বে আমরা যেন বাংলাদেশকে দ্বিতীয়বারের মতো স্বাধীন করতে পারি।’
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমি শুধু একটা অনুরোধ করব, যারা শহীদ জিয়ার রাজনীতিতে বিশ্বাস করে, যারা বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদে বিশ্বাস করেন, যারা দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার রাজনীতিতে বিশ্বাস করেন, যারা তারেক রহমানের রাজনীতিতে বিশ্বাস করেন, তারা দয়া করে ছোটখাটো বিষয় নিয়ে নিজেদের মধ্যে কোনো সংঘাত সৃষ্টি করবেন না।’
মিলাদ মাহফিলে আরও অংশ নেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, জয়নাল আবেদীন (ভিপি জয়নাল), আব্দুল কুদ্দুস, আবুল খায়ের ভুঁইয়া, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, কেন্দ্রীয় নেতা ফজলুল হক মিলন, আবদুল সামাদ আজাদ, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, মীর সরফত আলী সপু, এবিএম মোশাররফ হোসেন, রিয়াজুল ইসলাম রিজু, এম এ মালেক, তাইফুল ইসলাম টিপু, মোস্তাফিজুর রহমান, আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, স্বেচ্ছাসেবক দলের রাজীব আহসান, ইয়াসীন আলী, উলামা দলের শাহ নেছারুল হক, নজরুল ইসলাম তালুকদারসহ কেন্দ্রীয় ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা।
Posted ০৯:১৫ | রবিবার, ২০ নভেম্বর ২০২২
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain