
নিজস্ব প্রতিবেদক | বুধবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৩ | প্রিন্ট
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ক্ষমতায় এডিক্টেড আওয়ামী লীগ জাতিসংঘকেও তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য ও অবজ্ঞা করছে। যে সংস্থা গোটা বিশ্বের মানুষের অধিকারের জন্য কাজ করে তারা (আওয়ামী লীগ) সেই জাতিসংঘকে অবজ্ঞা করছে।
বুধবার (৮ নভেম্বর) বিকেলে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
রিজভী বলেন, ওবায়দুল কাদের জাতিসংঘকেও তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করছেন। তাদের বক্তব্য বিবৃতি ফালতু হিসেবে বিবেচনা করছেন। এটা দেশবাসী জানছে না? বিশ্ববাসী জানছে না? আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং তাদের সংগঠনগুলো জানছে না?
রিজভী বলেন, জনগণের সম্মিলিত আওয়াজ, সরকার পতনের ধ্বনি শুনতে পাচ্ছি। তাদের (ক্ষমতাসীন) পতন বেশি দূরে নয়। এ কারণেই ওবায়দুল কাদের এবং অন্যান্য মন্ত্রী চিৎকার করে টেলিভিশনের সমস্ত আলো নিজেদের দিকে নিয়ে গলা ফাটিয়ে অনর্গল মিথ্যা বলছেন।
বিএনপির মুখপাত্র সরকারের কঠোর সমালোচনা করে বলেন, আসলে মানুষ যখন কোনো কিছুতে এডিক্টেড হয়ে যায় তখন বাবা, মা, ভাই-বোন ও সন্তানকেও চিনতে পারে না। এডিক্টেডরা বাবা-মায়ের সাথেও দুর্ব্যবহার করে। কখনো কখনো মেরেও ফেলে। আজকে ক্ষমতাসীনরাও এক ধরনের এডিক্টেড। এ কারণে তারা দেশকে বিরাজনীতিকরণ করছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতাও আজকে একজন কূটনৈতিককে মারার কথা বলে। দেশের রাজনীতির শিষ্টাচার কোন পর্যায়ে গেলে একজন কূটনৈতিককে পাতি নেতার চড় দেওয়ার কথা বলে। আওয়ামী লীগের এমন গুণ্ডা-পাণ্ডারা বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছে।
রিজভী বলেন, মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে আওয়ামী লীগের এমপি-মন্ত্রীরা হুমকি-ধামকি দিচ্ছে। কিছুদিন আগে তিনি নিজের এবং অ্যাম্বাসির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিরাপত্তা নিয়ে শংশয় প্রকাশ করেছেন। গত বছর রাজধানীর শাহিনবাগে পিটার হাসের গাড়িতে হামলা করেছিল আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা। পিটার হাস বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, মানুষের ভোটাধিকার ও মানবাধিকার সুরক্ষার কথা বলছেন- এটাই তার অপরাধ।
বিএনপির এই সিনিয়র নেতা অভিযোগ করে বলেন, সারাদেশের অবরোধ কর্মসূচিতে প্রবল পুলিশি হামলা চালানো হয়েছে। বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে তাদের গ্রেফতার করেছে। অনেক ক্ষেত্রে তাদের না পেলে মা-বাবা, ভাই অথবা পরিবারের অন্য সদস্যকে বিভিন্নভাবে নাজেহাল করেছে। বাড়ি ঘরের আসবাবপত্রও ভাঙচুর করা হয়েছে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, ঢাকা মহানগর পূর্ব ছাত্রদলের সদস্য আলামিনকে সাদা পোশাকধারী গোয়েন্দা পুলিশ তুলে নিয়ে গেছে। তাকে কোথায়-কীভাবে রেখেছে আমরা তাও জানি না। শেখ হাসিনার সাজানো আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং গোয়েন্দারা এই কাজগুলো করছে। বিএনপির নেতাকর্মীরা যাতে রাস্তায় না নামে সেজন্য ভীতির পরিবে তৈরি করতেই মূলত এই কাজগুলো করা হচ্ছে।
আমাদের ঠিকানা হয় কারাগার না হয় রাজপথ উল্লেখ করে রিজভী বলেন, সকল প্রতিকূলতা ও প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষা করে নেতাকর্মীরা বুকে বুলেট বরণ করে নিয়ে রাজপথে দাঁড়াচ্ছে। তারা রাজপথে দাঁড়াবে যতক্ষণ পর্যন্ত দেশে গণতন্ত্র ফিরে না আসে। যতক্ষণ পর্যন্ত অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচনের পথ তৈরি না হয়। আমাদের সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে। আমাদের ঠিকানা হয় কারাগার, না হয় রাজপথ। এর মাঝখানে আমাদের কিছু নেই। আমাদের নিয়ে যেতে পারে কারাগারে, নানাভাবে আঘাত-অত্যাচার করতে পারে, আমরা সমস্ত কিছু বরণ করেই আমাদের উদবেল অভিযাত্রা অব্যাহত রাখবো।
তিনি আরও বলেন, শ্রমজীবী মানুষ ন্যায্য পাওয়ানার জন্য আন্দোলন করছে। অথচ তাদের প্রতি সরকার মারমুখী হয়ে উঠেছে। ক’দিন আগে একজন শ্রমিক নেতাকে হত্যা করা হয়েছে, আজকে একজন নারী শ্রমিক হত্যা করা হয়েছে। পুলিশ আজকে উৎসাহিত, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী উৎসাহিত, কারণ এসবের জন্য সরকার তাদের আশকারা দিচ্ছে।
Posted ১৫:২৪ | বুধবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৩
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain